রাহুলকে “নায়ক” বানানোর চাল বুমেরাং নাকি পথ মসৃণ করে মোদি-শাহদের?

Spread the love

রাজনৈতিক শত্রুতা নাকি লোকসভার আগে ক্ষয়িষ্ণু
কংগ্রেসকে কৌশলে কিছুটা অক্সিজেন জুগিয়ে নিজেদের রাস্তা মসৃন করার চেষ্টা, রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের পর রাজনৈতিক মহলে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির ভূমিকা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ২০১৪ ও ‘১৯, লোকসভা ভোটে বিজেপি বিরোধী প্রধান মুখ ছিলেন রাহুল গান্ধী। এবং যা হওয়ার তাই হয়েছে, পার্টটাইমার নেতাকে ভরসা করেনি অবিজেপি ভোট ব্যাঙ্ক। ড্যাং ড্যাং করে লেটার মার্কস নিয়ে ভোট বৈতরণী পার হয়েছেন নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহরা। চব্বিশের ভোটের আগে সেই একই ফরমুলা প্রয়োগ করতে চাইছে বিজেপি। ফের বিরোধী মুখ হিসেবে রাহুল গান্ধীকে চর্চায় আনতে চাইছেন মোদি-শাহরা। অবিজেপি দলগুলির মধ্যে কংগ্রেসকে “বিগ-বস” হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি।

কিন্তু অন্য একটি দিকও আছে। রাহুলকে “নায়ক” বানানোর চাল বুমেরাং হতে পারে বিজেপির। ভোটের একবছর আগেও ছন্নছাড়া বিরোধীরা। অবজেপি দলগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব প্রকট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অরবিন্দ কেজরিওয়াল অবশ্য নিজেদের মতো করে অবিজেপি, অকংগ্রেসি একটি বিকল্প ফ্রন্ট তৈরির চেষ্টায় আসেন বটে, কিন্তু সেটা কতদূর সফল হবে, তা সময়ই বলবে। তবে রাহুল গান্ধীর লোকসভার সদস্যপদ খারিজ হতে না হতেই বিজেপির রাজত্বে “গণতন্ত্র বিপন্ন!” অভিযোগে সব বিরোধীদের গলায় একসুর। কিন্তু কংগ্রেসকে সামনে রেখে বা রাহুলকে মুখ করে এই ইস্যুতে অবিজেপি দলগুলির মধ্যে যে ব্যাপক সমন্বয় তৈরি হয়ে গেল, সেটা বলার সময় অবশ্য হয়নি।

যদিও অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপির অন্দরে। রাহুল গান্ধীর ইস্যু বিরোধীদের হঠাৎ এক ছাতার নীচে নিয়ে এসে সম্মিলিত এক শক্তিতে পরিণত করবে না তো? এই আতঙ্ক এবার গ্রাস করেছে গেরুয়া শিবিরকে। সাতের দশকে রাহুলের ঠাকুমা, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধীকেও ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর জেলে যেতে হয়েছিল। তার জেরে দেশবাসীর সহানুভূতি পেয়ে যান তিনি। আর তিন বছরের মধ্যেই পরবর্তী নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়ী হয়ে ফিরে আসেন। রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের ঘটনায় তার ছায়া দেখতে পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। ইন্দিরার সেই লড়াইয়ের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাবেন না তো রাহুল?

বিজেপির অন্দরেও কিন্তু জন্ম নিয়েছে ভিন্ন ভাবনা। রাহুল গান্ধী “নায়ক” হয়ে গেলেন না তো? আগামী দিনে দেশজুড়ে কংগ্রেস প্রচার করতে পারেন, রাহুল গান্ধীকে সংসদ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস এই ইস্যুকে কোনদিকে এবং কীভাবে নিয়ে যাবে, তা নিয়েও ধোঁয়াশায় বিজেপিও। তবে রাহুল গান্ধী যদি সহানুভূতি পেতে শুরু করেন এবং সেটাকে আগামী ভারত জোড়ো যাত্রায় পুঁজি করেন, তাহলে কোন পথে প্রতিরোধ করা হবে তা নিয়েও পরিকল্পনা শুরু করেছে বিজেপি। তবে বিজেপিকে একটি বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছে, কারণ রাজনৈতিক প্রতিভায় ঠাকুমা ইন্দিরার ছায়ারও ধারেপাশে নেই রাহুল। ফলে রাহুলকে “নায়ক” বানানোর চাল বুমেরাং নাকি পথ মসৃণ করে মোদি-শাহদের সেটাই দেখার।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*