মণিপুরের থৌবাল থেকে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু রাহুলের

Spread the love

মণিপুরের থৌবাল থেকে রবিবার বিকেলে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু করলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। প্রসঙ্গত যাত্রা শুরু হওয়া থৈবালের খংজোন ওয়াল মেমোরিয়াল একটি ঐতিহাসিক তাৎপর্যপূর্ণ জায়গায়। মণিপুরে চলতে থাকা জাতিগত হিংসার মধ্যে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। গত মে মাস থেকে মণিপুরে ঙওয়া হিংসায় সরকারি হিসেবে ১৮০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে।

রাহুল গান্ধীর এই যাত্রা দেশের উত্তর-পূর্ব, পূর্ব ও উত্তর ভারতের পনেরোটি রাজ্যের মধ্যে দিয়ে যাবে। একশোটি লোকসভা কেন্দ্র ছুঁয়ে যাবে এই যাত্রা। ২০ কিংবা ২১ মার্চ এই যাত্রা শেষ হবে। মণিপুর ছাড়াও উত্তর-পূর্বের নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয় ও অসমের মধ্যে দিয়ে এই যাত্রা পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করবে। এর মধ্যে নাগাল্যান্ডে দু’দিনে ২৫৭ কিমি, অরুণাচলে একদিনে ৫৫ কিমি, মেঘালয়ে একদিনে পাঁচ কিমি এবং অসমে আটদিনে ৮৩৩ কিমি পথ অতিক্রম করবে এই যাত্রা।

এদিন যাত্রা শুরুর আগে রাহুল গান্ধী তাঁর বক্তব্যে ভারত জড়ো ন্যায় যাত্রা-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সরব হন। তবে বক্তব্যের বেশিরভাগ অংশেই ছিল বিজেপি ও আরএসএসকে কড়া ভাশায় আক্রমণ। এদিন রাহুল মনে করিয়ে দেন, ২৯ জুনের পর মণিপুর আর মণিপুরে নেই। আমি আমার রাজনৈতিক জীবনে এই প্রথম দেশের কোনও এক রাজ্যে গেলাম সেখানে সরকার বলে কিছুই নেই। মোদিকে একহাত নিয়ে রাহুল বলেন, আরএসএস এবং বিজেপির কাছে মণিপুরের কোনও মূল্যই নেই। আর সেকারণে এখানকার এত খারাপ অবস্থা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের পাশে একবারের জন্য এসে দাঁড়াননি প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া রাহুলে এদিনের বক্তব্যে ভারত জোড়ো যাত্রার থেকে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার মিল এবং পার্থক্য বুঝিয়ে দেন রাহুল।

অন্যদিকে, দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বক্তব্যের শুরুতেই ভারত জোড়ো যাত্রার পাশাপাশি ভারত জোড়ো ন্যায়যাত্রা সম্পর্কে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কথা মনে করিয়ে দেন। পাশাপাশি এই যাত্রার জন্য রাহুল্কে আন্ত্রিক শুভেচ্ছাও জানান কংগ্রেস সভাপতি। তবে এদিন প্রধান্মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি খাড়গে। তিনি সাফ জানান, মুখে রাম আর বগলে ছুরি নিয়ে রাজনীতির চেষ্টা করছেন। ভোটের জন্য এই নোংরা রাজনীতি মানুষের সঙ্গে না করার অনুরোধ জানান তিনি। খাড়গে মনে করিয়ে দেন রাজনীতিগতভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুণ কিন্তু সাধারণ মানুষের সঙ্গে এমন কিছু করবেন না যাতে মানুষের চরম ক্ষতি হয়। পাশাপাশি বিরোধী সাংসদদের জোর করে সাসপেন্ড করার মোদির ‘তুঘলকি শাসনের’ তীব্র প্রতিবাদ করেন তিনি।

যাত্রার সূচনা করেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। তিনি রাহুলের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন। ভাষণে খাড়্গে বলেন, দেশের একটি স্বৈরাচারী শক্তির উত্থান ঘটেছে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় সংবিধান বাঁচাতে কংগ্রেসের এই অভিযান। রাহুল রবিবার যাত্রার প্রথম দিনে ১০ কিলোমিটার পথ হেঁটেছেন। রবিবার রাতে তিনি থাউবালে থাকবেন। সোমবার সেখান থেকে বাসে নাগাল্যান্ড পৌঁছাবেন।

ভারত জোড়ো যাত্রার দ্বিতীয় পর্বে রাহুল ৬৬দিনের মাথার মুম্বই পৌঁছাবেন। এবার মোট ৬৬০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবেন। তবে বেশিরভাগ অংশই যাবেন বাসে। রাহুলের এবারের যাত্রার নাম এবং রুট বদল হয়েছে, কিন্তু পোশাকের পরিবর্তন হয়নি। রাহুল আগের বারের মতোই সাদা টি শার্ট এবং কালো রংয়ের প্যান্ট পরে হাঁটছেন। পাশে সকলের গায়ে অবশ্য পর্যাপ্ত গরম জামা-কাপড়। শনিবার থেকে মণিপুরে বেশ ঠান্ডা পড়েছে। 

এই পর্বে রাহুল উত্তর-পূর্ব ভারতের পর পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড হয়ে এগোবেন। বাংলায় পাঁচ দিনে সাতটি জেলায় যাবেন তিনি। জেলা পিছু একটি সভায় ভাষণ দেবেন। 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*