বকেয়া আদায়ে ২ ও ৩ অক্টোবর দিল্লিতে তৃণমূলের ধর্না কর্মসূচি আটকাতে আগাম টাকা নিয়েও ট্রেন বাতিল করেছে কেন্দ্র। এই অবস্থায় ৫০ টি বাস নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে ‘দিল্লি চলো’ অভিযান। তবে বাসের পাশাপাশি হাওড়া ও শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেসেও দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। কয়েকশো নেতাকর্মীর পাশাপাশি ট্রেনে দেখা গেল তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী, মুখপাত্র মৃত্যুঞ্জয় পাল সহ একাধিক নেতাকে। পাশাপাশি এই ট্রেনেই দিল্লি যাচ্ছেন তৃণমূল সাংসদ শতাব্ধী রায়ও।
তৃণমূল সূত্রে খবর, ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই কর্মসূচির ঘোষণা করার পরই বিশেষ ট্রেনের অপেক্ষা না করে রাজধানী এক্সপ্রেসের টিকিট কাটেন কয়েকশো কর্মী। গোটা রাজ্য থেকেই তৃণমূল কর্মীরা হাওড়া ও শিয়ালদহ থেকে দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেসের টিকিট কেটে রেখেছিলেন। আজই তারা রওনা দিয়েছেন দিল্লির উদ্দেশ্যে। তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই সংখ্যাটা কয়েকশো। যেখানে দলের কর্মীদের পাশাপাশি রয়েছেন বহু দলীয় নেতাও। শেষ মুহূর্তে রেলের তরফে ট্রেন বাতিলের এই ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “গরিবের টাকা আটকে রেখেছে ওরা। এখন সেই মানুষগুলো যাতে দিল্লি গিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে, ওদের চেহারাটা যাতে বেআব্রু হয়ে না পড়ে, তার জন্য ভীতু মোদি সরকার ষড়যন্ত্র করে শেষ মুহূর্তে ট্রেন বাতিল করেছে। একই ঘটনা ওরা ঘটিয়েছিল কৃষক আন্দোলনের সময়ে। তবে এভাবে আটকানো যায় না।” এদিকে শুধু ট্রেন নয়, এই ধর্না কর্মসূচিতে যোগ দিতে রবিবার সন্ধে ৬টা ৪৫ মিনিট দমদম বিমানবন্দর (Dumdum Airport) থেকে দিল্লির বিমান ধরার কথা ছিল দলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার-সহ শতাধিক নেতা-কর্মীর। বারাসত (Barasat) থেকে ১২০ জনের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা আগে জানা গেল, সেই বিমানটি বাতিল। কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে ব্যবস্থাপনায় সমস্যার জন্য বাতিল করা হয়েছে বিমানটি। হঠাৎ এই বিমান বাতিলকে পুরোপুরি মোদি সরকারের ষড়যন্ত্র বলে তোপ দেগেছেন ডেরেক।
তবে তৃণমূলকে আটকাতে মোদি সরকারের তরফে হাজারো চেষ্টা চালানো হলেও মরিয়া ঘাসফুল শিবির। ১০০ দিনের কাজের টাকা না পাওয়া বঞ্চিত শ্রমিক ও কর্মীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় দিল্লি-যাত্রার জন্য অল ইন্ডিয়া পারমিট থাকা আন্তঃরাজ্য চলাচলকারী স্লিপার ক্লাস বাস নেওয়া হয়েছে ৫০ টিরও বেশি। প্রতিটি বাসে থাকছেন ২ জন করে চালক। মেডিক্যাল কিট ছাড়াও থাকছেন চিকিৎসক। পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। দিল্লি-যাত্রায় বিভিন্ন জায়গায় বাস দাঁড়াবে। সম্ভাব্য রুট হল, কলকাতা-আসানসোল-ধানবাদ-বারাণসী-কানপুর, আগরা হয়ে দিল্লি। বিভিন্ন জেলা অনুযায়ী বাস বরাদ্দ করা হয়েছে। তৃণমূলের টার্গেট, দিল্লিতে অন্তত ৩-৪ হাজার মানুষের জমায়েত। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে ২ ও ৩ অক্টোবর দিল্লিতে ধর্নায় বসবে তৃণমূল।
Be the first to comment