ডোমজুড়ে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখানো হলো কালো পতাকা। ‘গদ্দার, মিরজাফর রাজীব দূর হাটো’ উঠল স্লোগান। যার জেরে কার্যত অস্বস্তিতে পড়েন রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী ও ডোমজুর কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক। শুক্রবার রাতে প্রয়াত হন ডোমজুর কেন্দ্রের তৃণমূল সভাপতি ও সলপের প্রাক্তন প্রধান সুধীর ঘোষ। সেই কারণে আজ প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যান রাজীব। সকাল এগারোটা নাগাদ সলপে আসেন। শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি পরিবারকেও সমবেদনা জানাতে যান তিনি।
কিন্তু সুধীর বাবুর বাড়িতে ঢোকার আগেই বিপত্তির মুখে পড়েন ডোমজুর কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক। গাড়ি থেকে নামতেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। বাধ্য হয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে যান। পরে সুধীর বাবুর ভাইপো গোপাল ঘোষ জানান, মৃত্যু নিয়েও রাজনীতি হচ্ছে। আজকের ঘটনায় তাঁদের গোটা পরিবার ক্ষুব্ধ।পাশাপাশি ডোমজুরের বিধায়ক তথা হাওড়া সদর তৃণমূলের সভাপতি কল্যাণ ঘোষের অনুগামীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে, সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে কল্যাণ ঘোষ জানান, তৃণমূল কর্মীরা এই ধরনের কাজ করে না। গ্রামবাসীরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই বিক্ষোভ দেখিয়েছে কারণ ডোমজুরের মানুষের সঙ্গে যে দুর্ব্যবহার ও তোলাবাজি সহ নানান নিম্ন মানের কার্যকলাপ রাজীব ব্যানার্জী করেছেন এটা তারই প্রতিক্রিয়া।
এক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, বিধানসভা ভোটের আগে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সঙ্গে গদ্দারি করেছেন। তাই সাধারণ মানুষ আর ওনাকে মেনে নিতে পারছেন না। তাই ওনাকে গাড়ি থেকে নামতে দেখেই সাধারণ মানুষ নিজেদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে গদ্দার, মিরজাফর বলে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছে বিজেপি। রাজ্য কমিটির সদস্য উমেশ রায় জানিয়েছেন, এটাই তৃণমূল কংগ্রেসের সংস্কৃতি। তৃণমূল কংগ্রেসে যখন কেউ থাকে সে ধোয়া তুলসীপাতা। যখন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তখন তিনি জানিয়েছিলেন পিসি ভাইপোর সিন্ডিকেটের সরকার চলছে রাজ্যে। এখন আবার তিনি যখন তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। নিজের কাজ কর্মের কারণেই এই বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ অক্টোবর ঘর ওয়াপসি হয় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। একসময় দিল্লিতে গিয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। পরে ভোট মিটতেই ফের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক দলে ত্রিপুরায় গিয়ে ঘাসফুলের পতাকা পুনরায় হাতে নেয়! অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা থেকে দলে যোগ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চান তিনি। বলেন, তিনি লজ্জিত ও অনুতপ্ত।
Be the first to comment