একুশের ফল ঘোষণার পর ফের দলবদলের জল্পনায় সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। বিধানসভা নির্বাচনে হ্যাটট্রিকের পর দলবদলু নেতাদের কার্যত স্বাগত জানিয়েছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলনেত্রী বলেছেন, ‘আসুক না। কে বারণ করেছে? এলে স্বাগত!’ মমতার এই ঘোষণার পরই দুই বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের জল্পনা জোরালো হয়েছে। এ নিয়ে এবার মুখ খুললেন ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক।
এই প্রসঙ্গে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা করব।’ তাহলে কি তৃণমূলে ফিরছেন? রাজীবের সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘ এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। কে জল্পনা ছড়িয়েছে জানি না।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জয়ের অভিনন্দন জানিয়েছেন? রাজীবের উত্তর, ‘সেটা সংবাদমাধ্যমে বলব কেন।’ যে সুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে ফের মন্তব্য করলেন রাজীব, তা যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ। অন্যদিকে, ডোমজুড়ে এবার বিজেপির টিকিটে হেরে গিয়েছেন রাজীব। হারের কারণ আলোচনা করে দেখা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজীব। তৃণমূল থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর কেঁদে ফেলেছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘মায়ের মতো’ বলে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তে দেখা গিয়েছিল রাজীবকে। একুশের মহাযুদ্ধে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই টার্গেট করতে আসরে নামেন রাজীব। বাংলার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন মমতা, এ ভাষাতেই প্রাক্তন দলনেত্রীকে বিঁধেছিলেন বিজেপির রাজীব।
প্রাক্তন সৈনিককে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রাজীবের কেন্দ্র হাওড়ার ডোমজুড়ের সভামঞ্চ থেকে মমতা বলেছিলেন, ‘ডোমজুড়ের কাছে ক্ষমা চাইছি। কারণ, গত বছর এখানে গদ্দারকে প্রার্থী করেছিলাম। গদ্দার জনগণের টাকা মেরেছেন। আমায় বলেছিল, ওকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট দেওয়া হোক। যাতে আরও কমিশন নিতে পারে। সেচ দফতরে দুর্নীতি করে অনেক টাকা করেছে। অভিযোগ আসায় ওকে সেচ দফতর থেকে সরিয়ে দিই। পরে বন দফতর দিই। বুঝতে পারিনি তার ভিতরে এত প্যাঁচ রয়েছে। কলকাতায়, দুবাইয়ে অনেক সম্পত্তি করেছে। যাও মানুষকে জবাব দাও। তারপর ভোট চাও। আগে জানলে ওকে অনেক আগেই সরিয়ে দিতাম। এখন আবার গানের ক্যাসেট বের করছে… সবই নাকি উনি করেছেন! তাহলে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়োজন ছিল না। উনি একটা হরিদাস মন্ত্রী।’
Be the first to comment