জাপান থেকে ভারত -দূরত্বটা নেহাত কম নয়। শনিবার সন্ধ্যায় “সোনার ছেলে” নীরজ চোপড়ার সেই দূরত্ব মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল। টোকিয়োর ন্যাশনাল অলিম্পিক্স স্টেডিয়ামে ভারতের পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংগীতের সময় গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল প্রত্যেক ভারতবাসীর। তবে বাঙালিদের মধ্যে এই উচ্ছ্বাস একটু বেশি কারণ নীরজের হাত ধরে টোকিয়োতে বাজল রবীন্দ্র সঙ্গীত। কারন আজ দিনটা যে ২২ শ্রাবণ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুদিন।
শনিবার অলিম্পিক্সে নীরজ সোনা জেতায় প্রথা মেনে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ‘জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে’ বাজল। সেই সঙ্গে উড়লো ভারতের জাতীয় পতাকা। এই দৃশ্য দেখে বাঙালি আর নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেনি। বিশ্বকবির মৃত্যুদিনে জাতীয় সঙ্গীত বাজার জন্য নেটাগরিকরা বাড়তি ধন্যবাদ জানিয়েছেন নীরজকে।
এতদিন অলিম্পিক্সে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডস থেকে কোনও পদক ছিল না ভারতের ঝুলিতে। সবথেকে কাছে এসেছিলেন মিলখা সিং এবং পিটি উষা। কিন্তু অল্পের জন্য পোডিয়ামে উঠতে পারেননি। সেই বিষাদ কাটিয়ে আর যখন ঐতিহাসিক মুহূর্ত এল, তখন একেবারে খুশির কোনও বাধ মানল না। শনিবার টোকিও অলিম্পিক্সে জ্যাভেলিন থ্রোয়ের ফাইনালে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সৌজন্যে সোনা জিতে নেন নীরজ। যিনি অলিম্পিক্সের ইতিহাসে প্রথম ভারতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে কোনও পদক জয়ের নজির গড়েছেন।
শনিবার জয়ের পর পোডিয়ামে পদক নিতে উঠে যথারীতি আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন নীরজ। আনন্দাশ্রুও ঝরে পড়ে নীরজের চোখ থেকে। মাস্কের ভিতর থেকে নীরজকে জাতীয় সংগীতে গলা মেলাতে দেখা যায়। পরে তাঁকে চোখে ক্যামেরা জুম করতেও ধরা পড়ে আবেগের সেই ছবি। যে মুহূর্তের জন্য ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছিলেন ভারতীয়রা।
পরে নীরজ বলেন, ‘অবিশ্বাস্য লাগছে। অ্যাথলেটিক্সে এই প্রথম ভারত সোনা জিতল। তাই আমার দারুণ লাগছে। অন্যান্য খেলাধুলোয় এবার (টোকিয়োয়) একটা সোনা এসেছে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘দীর্ঘদিন পর এটা অলিম্পিক্সে আমাদের প্রথম (সোনার) পদক। অ্যাথলেটিক্সে প্রথমবার আমরা সোনা জিতেছি। আমি এবং আমার দেশের জন্য গর্বের মুহূর্ত।’
সোনা যে জিতবেন, এমনটা মোটেও ভাবেননি নীরজ। তিনি বলেন, ‘যোগ্যতা-অর্জন পর্বে আমি ভালো ছুড়েছিলাম। আমি জানতাম যে ফাইনালে আরও ভালো করতে পারব।’ সঙ্গে বলেন, ‘আমি জানতাম যে এটা সোনা হবে।’
Be the first to comment