“বিজেপিতে গিয়ে ভুল করেছি। বিজেপি একটি অত্যন্ত প্রতিহিংসা পরায়ণ দল।” সোনালি গুহর পর এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চাইলেন সরলা মুর্মু। মালদার হবিবপুর কেন্দ্রে সরলা মূর্মূকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা। কিন্তু প্রার্থী পদ ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। টিকিট পাওয়ার পরও কেন তিনি বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তা নিয়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে রাজ্য রাজনীতিতে।
বিজেপিতে যোগ দিয়ে সরলা অভিযোগ করেছিলেন, “তৃণমূল থেকে শুধু পোস্ট দেওয়া হয় কোনও কাজ করতে দেওয়া হয় না। বিজেপি থেকে আমরা কিছুই চাইছি না। শুধু কাজ করতে চাই। নিঃস্বার্থভাবেই দলে যোগ দিয়েছি।” মালদায় তৃণমূল কর্মীরা প্রতিবাদে সরলা মুর্মুর প্রতীকী শ্রাদ্ধানুষ্ঠানও করেন।
তবে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারে সরলাকে সেভাবে সক্রিয়া থাকতে দেখা যায়নি। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই উল্টো সুর। তাঁর দাবি, বিজেপিতে গিয়ে ভুল করেছেন। সেকারণে দিদি যেন ক্ষমা করে দেন। ফের তৃণমূলেই ফিরতে চাইছেন মালদহ জেলা পরিষদের সদস্য সরলা মুর্মু।
তাঁর বক্তব্য, দলে ফিরে একজন সৈনিক হিসেবে কাজ করবেন তিনি। সরলা দাবি করেন, প্ররোচনায় পা দিয়েই নাকি তিনি দলবদল করেছিলেন। যদিও সে সময়ই ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সরলা মুর্মু। পরবর্তীতে দলে যোগাযোগ করা হলে এ নিয়ে সদুত্তর পাননি সরলাদেবী। শেষপর্যন্ত দলীয় নেতৃত্বের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলে জানা গিয়েছে।
সরলা মুর্মুর ফিরতে চাওয়া নিয়ে তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায়ের বক্তব্য, “এরকম অনেকেই আছে, যাঁরা ফিরতে চাইছেন। তাঁদের নাম লোকে জানে না প্রকাশ্যে। বিজেপি থেকে দলে দলে লোক চলে আসতে চাইছে। আমার ব্যক্তিগত বক্তব্য, ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যাঁরা দল ছেড়েছিলেন, তাঁদের নেওয়ার ব্যাপারে ভাবা উচিত। বলে দেওয়া উচিত ৬ মাস দলে কাউকে নেওয়া হবে না। তবে এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমাদের নেত্রীই নেবেন।”
অন্যদিকে, বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলছেন, “নির্বাচনের ঠিক আগেই বসন্তের কোকিল মতো ওঁরা মনে করেছিলেন, সুসময়টা বিজেপির দিকেই। তাই তাঁরা নোনা জলের মতো ঢুকেছিলেন। রাজনীতিতে যাঁরা দলবদল করেন, তাঁঁরা মতাদর্শের ভিত্তিতে করেন। দু’মাসের মধ্যেই তো মতাদর্শ বদলে যেতে পারে না। আগে ওঁদের কাছে তৃণমূল ছিল কাটমানির দল, তোলাবাজির দল। এখন বিজেপি খারাপ। ওঁদের কাছে মতাদর্শের কোনও ব্যাপার নেই। ওঁরা সুবিধাবাদী।”
উল্লেখ্য, শনিবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে খোলা চিঠি লেখেন সোনালি গুহ। শনিবার টুইটে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফিরিয়ে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন প্রাক্তন এই বিধায়ক।
Be the first to comment