মহারাষ্ট্রে সংকট কাটার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উল্টে প্রতিদিনই নানা আইনি এবং সাংবিধানিক জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। এরই মধ্যে একনাথ শিন্ডের শিবির রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারিকে অবিলম্বে বিধানসভার স্পিকার নির্বাচন করার দাবি জানিয়ে চিঠি দিতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। রাজনৈতিক মহলের মতে, শেষ পর্যন্ত পাওয়ার, উদ্ধবদের চালে ধরাশায়ী হতে হবে, এই আশঙ্কা থেকেই শিন্ডে এখন নতুন নতুন বায়নাক্কা শুরু করেছেন।
এখন প্রশ্ন, স্পিকার নির্বাচন নিয়ে রাজ্যপাল কী করবেন। এর আগেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, বিষয়টি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এই অবস্থায় তিনি স্পিকার নির্বাচন করতে অপারগ। একই কারণে ডেপুটি স্পিকারকেও এখন বদল করা যাবে না। এই অবস্থায় শিন্ডে শিবির বেকায়দায় পড়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে উদ্ধব ঠাকরে কিছুটা স্বস্তির মধ্যে রয়েছেন। শিন্ডে আবার ডেপুটি স্পিকার নরহরি জিরওয়ালের অপসারণ চেয়ে প্রস্তাব আনার জন্য নোটিস দিয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে তার বৈধতা নিয়েও। বিধি অনুযায়ী রাজ্যপাল যদি বিধানসভার অধিবেশন আহ্বান করেন, একমাত্র তখনই এই ধরনের প্রস্তাব বা মোশন আনা যায়। তা ছাড়া স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারকে সরাতে হলে অন্তত ১৪ দিনের নোটিস দিতে হয়। সেই ১৪ দিনের মেয়াদ শেষ হলে বিধানসভায় সেই মোশন আনতে হবে এবং তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
পরিষদীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যপাল এখনও যেহেতু বিধানসভার অধিবেশন আহ্বান করেননি, তাই শিন্ডের চিঠির কোনও আইনি বৈধতা নেই। সেই চিঠি কোনও প্রস্তাব বা মোশনও নয়। তাকে তাই গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই। শিন্ডে এ ব্যাপারে অরুণাচল প্রদেশের নেবাম রেবিয়া মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের নজির হাজির করেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তার সঙ্গে মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতির কোনও মিল নেই।
এদিকে ডেপুটি স্পিকার আগেই বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। তবে কি রাজ্যপাল তাঁকে ওই কাজ থেকে বিরত থাকার কথা বলতে পারেন? জবাব হল, না। রাজ্যপাল তা পারেন না। নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রী পরিষদের সুপারিশ পাওয়ার পর রাজ্যপাল আনুষ্ঠানিকভাবে বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে পারেন। এই মুহূর্তে মন্ত্রিসভার তেমন কোনও সুপারিশ করার তাগিদ নেই।
গত এক বছর ধরে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় স্পিকারের পদ শূন্য। স্পিকার নানা পাটোলে পদ ছেড়ে দিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হয়েছেন। তার পর থেকে কাজ চালাচ্ছেন ডেপুটি স্পিকার। সব মিলিয়ে বল এখন রাজ্যপাল এবং ডেপুটি স্পিকারেরর কোর্টে।
Be the first to comment