উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক বিপর্যয়। উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকালে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করার পরে বেলায় নবান্নে মুখ্যসচিব, মুখ্যমন্ত্রী মুখ্য উপদেষ্টা-সহ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে ফোনে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিপর্যস্ত মানুষের সাহায্য ২৪ ঘণ্টার হেল্প লাইন খোলার নির্দেশ দেন তিনি। একই সঙ্গে এই বিষয়ে জড়িত সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল করার নির্দেশও দেন মমতা।
সিকিমে মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা বিপর্যস্ত। বুধবার দুর্যোগ পরিস্থিতি নিয়ে কালিম্পংয়ে সেনা নামানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেন, ‘‘সিকিমে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির খবর এসেছে রাত তিনটের সময়। উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। কালিম্পংয়ে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে৷ সিকিমের সঙ্গে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। রাত থেকে আমি নজরদারি করছি৷ আমরা ভারতীয় সেনার সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে৷ ও দিকে ডিভিসিতে প্রচুর পরিমাণে জল জমে আছে৷ সেখানেও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ক্ষতি হওয়ার৷ আমরা একটু কম করে জল ছাড়তে বলেছি৷’’
সরকারের তরফে হেল্পলাইন নম্বর চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে কয়েক দিন সতর্ক থাকতে বিদ্যুৎ এবং স্বাস্থ্য দফতরের ছুটিও বাতিল করার কথাও বলে মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় নবান্নে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, মুখ্যমন্ত্রী মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য আধিকারিকের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন মমতা। পায়ে চোট লাগায় সশরীরে হাজির হতে পারেননি তিনি। ফোনে নির্দেশ দেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সিকিমে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির পর বিপর্যয় নেমে এসেছে। জাতীয় সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং। জলস্তর নামলে তবেই তিস্তার বাঁধ মেরামতের কাজে হাত দেওয়া যাবে। আপাতত মানুষ জনকে উদ্ধার করা প্রয়োজন। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার থেকে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। কথা হয়েছে অনীত থাপার সঙ্গে। সেনার সঙ্গেও কথা হয়েছে। তাদের সবরকমের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আমরা।” পরে মুখ্যসচিব সাংবাদিকদের জানান, আপাতত কালিম্পংয়ে এক কলাম সেনাকে কাজে ব্যবহার করা হবে।
একদিকে ডিভিসি জল ছেড়েছে, পাঞ্চেত, মুকুটমণিপুর থেকেও জল ছাড়া হচ্ছে, নইলে বাঁধ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। ১ লক্ষ ৭০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। সেই জল পৌঁছতে তিন দিন সময় লাগে। বিপর্যস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যাবেন রাজ্যের মন্ত্রী, সরকারের আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা।
Be the first to comment