প্রয়াত সত্যজিৎ রায়ের সিনেম্যাটোগ্রাফার সৌমেন্দু রায়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। বুধবার সকালে বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে নিজের বাড়িতেই জীবনাবসান হয় কিংবদন্তী সিনেমাটোগ্রাফারের। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি টলিপাড়ায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
এদিন শোকবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, বিশিষ্ট সিনেমাটোগ্রাফার সৌমেন্দু রায়ের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। মুখ্যমন্ত্রী আরও লেখেন, প্রবাদপ্রতিম চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে সৌমেন্দু রায় দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি তিন কন্যা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পথের পাঁচালী, অশনি সংকেত, অরণ্যের দিনরাত্রি, গুপী গাইন বাঘা বাইন ইত্যাদি ছবিতে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। সৌমেন্দু রায় চিত্রপরিচালক তপন সিংহ, তরুণ মজুমদার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, এম এস সথ্যু প্রমুখের ছবিতেও কাজ করেছেন। তিনি রূপকলা কেন্দ্রের উপদেষ্টা ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ২০১২ সালে ‘বিশেষ চলচ্চিত্র পুরস্কার’ ও ২০১৫ সালে ‘চলচ্চিত্র পুরস্কার’ প্রদান করে। এছাড়া তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর প্রয়াণে চলচ্চিত্র জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। এরপর সৌমেন্দু রায়ের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানান মমতা।
১৯৩২ সালে জন্মগ্রহণ করেন সৌমেন্দু রায়। কিংবদন্তী শিল্পী সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, তরুণ মজুমদার, সন্দীপ রায়, বুদ্ধদেব দাসগুপ্ত, উৎপলেন্দু চক্রবর্তী, রাজা সেন ও তপন সিংহের সঙ্গে একাধিক ছবিতে তাঁর অসামান্য দক্ষতা মনে রাখার মতো। সত্যজিৎ রায়ের প্রথম ছবি পথের পাঁচালীতে প্রয়াত সৌমেন্দু রায় ছিলেন সুব্রত মিত্রের সহকারী। এরপর একাধিক কাজ করলেও ১৯৬১ সালে তিন কন্যা ছবি দিয়ে সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে স্বাধীনভাবে কাজ শুরু করেন তিনি। জানা গিয়েছে, সেই সময় চোখের সমস্যার জন্য সুব্রত মিত্র কাজ থেকে বিরতি নেন। আর সেই সুবাদেই সত্যজিৎ রায়ের ডকুমেন্টারি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্যুট করেন সৌমেন্দু। তবে শুধু সত্যজিৎ রায়ই নন, পরিচালক তপন সিংহ, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ছবিতেও সিনেমাটোগ্রাফির দায়িত্ব সামলেছেন সৌমেন্দু।
Be the first to comment