বিধানসভা ভোটের সময় ‘দাদা’ হিসেবে সম্বোধন করেছিলেন। সেই ‘দাদার’ বিরুদ্ধেই তোপ দাগলেন বিষ্ণপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। অভিযোগ করলেন, দিল্লিতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় নেতাদের ভুল বুঝিয়ে আসছেন। তাঁকে ‘আয়নায় মুখ দেখার’ পরামর্শও দিলেন। সঙ্গে তোপ দেগে কটাক্ষ করেন, অর্ধেক কথাই বোঝেন না বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
প্রসঙ্গত, বুধবার বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ। কিছুক্ষণ পর ফেসবুক লাইভে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। প্রাথমিকভাবে শুভেন্দুর নাম না করে অভিযোগ করেন, এককেন্দ্রিক দল হয়ে যাচ্ছে বিজেপি। একজন বারবার ভুল বোঝাচ্ছেন। একটি জায়গায় দু’জন নেতা হয়ে চলছে। ‘যেভাবে অধিকারী-অধিকারী করছেন, তাতে আমি হতাশ।’
পরে অবশ্য কোনও রাখঢাক না করে সরাসরি বাংলা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সম্বোধন করে সৌমিত্র তোপ দাগেন, ‘যিনি বিরোধী নেতা হয়েছেন, আয়নায় মুখ দেখুন। দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাকে মুখ ভুল বোঝাবেন না।
তবে এদিন সৌমিত্র এখানেই থামেনি। ঘুরিয়ে তিনি দাবি করেন, ‘বাবা শিশির অধিকারী এবং ভাইকে কোনও পদে বসানোর জন্য দিল্লিতে দরবার করছেন শুভেন্দু। বারবার দিল্লিতে গিয়ে উলটো-পালটা বুঝিয়ে আসছেন। যেন মনে হচ্ছে, তিনি বিজেপির জন্য জীবনটা দিয়ে দিয়েছেন। আমাদের কোনও অবদান নেই। আমি কখনও ঘরের লোকের জন্য চাইনি যে ভাই, বাবাকে এই করে দাও, ভাইকে এই করে দাও, এই পদে দাও – এরকম কখনও চাইনি। আমি এরকম কখনও চাইনি।’ সঙ্গে দাবি করেন, কোনও স্বার্থ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস করেননি। বিজেপিও নিঃস্বার্থভাবে করেছেন।
তবে এই নিয়ে বুধবার যখন শুভেন্দুকে প্রশ্ন করা হয় তখন তিনি স্পষ্টা জানিয়ে দেন, এই ফেসবুক লাইভকে তিনি ‘সিরিয়াসলি’ নেন না। একই সঙ্গে সৌমিত্রকে নিজের ‘ভাই’ বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছেন শুভেন্দু। বিধানসভায় বুধবার এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শুভেন্দু বলেন, “আমি এ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করব না। অনেকেরই এমন অভ্যাস রয়েছে, এগুলো খুব একটা সিরিসায়লি না নেওয়াই ভাল। রাজ্য মন্ত্রিসভাও যেদিন গঠন হয়েছিল সেদিনও আমি দেখেছিলাম তৃণমূলের অনেককে ফেসবুক করতে। আজকের মন্তব্যটাও আমি সিরিয়াসলি নিচ্ছি না। সৌমিত্র খাঁ আমার ভাই। ওঁকে নিজের রাজনৈতিক সতীর্থ বলে মনে করি। আমি দিল্লি গেলে সৌমিত্রর বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করি।
অতএব, সৌমিত্র কী বলেছে, না বলেছে, তা নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।” তাঁর আরও সংযোজন, “কারোর কারোর ফেসবুক লাইভ করার অভ্যাস আছে। এটা ভাল দিকও বলতে পারেন। অনেকের স্বভাব চাপা, অনেকে প্রকাশ্যে বলে দেয়। আমি এটা খারাপভাবে নিচ্ছি না।”
Be the first to comment