চিরন্তন ব্যানার্জি:-
আরজি কর-কাণ্ডের আবহেই এবার সরকারি হাসপাতালগুলো নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালগুলির রোগী কল্যাণ সমিতি থেকে তুলে নিচ্ছে রাজনৈতিক রঙ। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে জানান, রোগী কল্যাণ সমিতিতে থাকবেন শুধুই হাসপাতালের অধ্যক্ষ বা সুপার।
রোগী কল্যাণ সমিতির মাথায় রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের বসানোর প্রচলন আসতে আসতে শুরু হয় বাম জামানা থেকেই, বর্তমানে তৃণমূল জামানায় সেটা প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা পায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে বলেন, এখন থেকে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হবেন হাসপাতালের অধ্যক্ষ বা সুপার। সঙ্গে সমিতিতে একজন নার্সকে রাখবেন, একজন পুলিশকে রাখবেন, স্থানীয় থানার আইসিকে রাখবেন। একজন সিনিয়র ডাক্তার, একজন জুনিয়র ডাক্তার আর স্থানীয় বিধায়ককে রাখবেন। আর কাউকে সমিতিতে রাখার দরকার নেই। যারা সরাসরি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত তারাই থাকুক।
প্রসঙ্গত, বর্তমান এসএসকেএম হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হলেন রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা অরূপ বিশ্বাস। কলকাতা মেডিকেল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হলেন তৃণমূল নেতা ও বিধায়ক ডাঃ সুদীপ্ত রায়। ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হলেন এন্টালির তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা। এনআরআস হাসপাতালে এই কমিটির চেয়ারম্যান হলেন তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন। একই ভাবে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও নর্থবেঙ্গল মেডিকেল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হলেন খোকন দাস ও গৌতম দেব।
উল্লেখ্য, শুধু তা নয়, সরকারি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ নিয়ে নির্মল মাজি ও শান্তনু সেনের টানাপোড়েনও সুবিদিত। তা ছাড়া নির্মল মাজির বিরুদ্ধে অতীতে বহুবার বহু অভিযোগও উঠেছে।
তৃণমূল ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, এর আগে একাধিক বার এই রোগী কল্যাণ সমিতিতে রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের রাখা নিয়ে দলের অন্দরে প্রশ্ন তুলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সম্ভবত তারই পরামর্শ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী রোগী কল্যাণ সমিতির নামে শাসক দলের নেতাদের হাসপাতালের বিষয়ে নাক গলানো বন্ধ করলেন।
Be the first to comment