গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হল ‘টাউকটে’

Spread the love

দিন গড়াতেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হল আরব সাগরের উপর তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপ। ধীরে ধীরে তা এগিয়ে যাচ্ছে গুজরাট উপকূলের দিকে। আগামী ১৭ মে নাগাদ তা অতি ভয়ঙ্কর ঝড় রূপে আছড়ে পড়বে বলেই পূর্বাভাস। চলতি বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়া সহ প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে লাক্ষাদ্বীপ, কেরল, কর্নাটক, গোয়া, মহারাষ্ট্র সহ একাধিক উপকূলবর্তী এলাকায়। এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি যাচাইয়ে শনিবারই বিশেষ বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের অধিকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।

শুক্রবার অবধি লাক্ষাদ্বীপের উপর এই নিম্নচাপ অবস্থান করলেও আজ তা গুজরাট উপকূলের দিকে সরতে শুরু করেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই নিম্নচাপ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে বলেই জানিয়েছেন আবহাওয়া দফতরের আধিকারিকরা। তাদের প্রকাশিত বুলেটিনে জানানো হয়েছে, আগামী ১৬ থেকে ১৯ মে-র মধ্যে আরব সাগরের উপর তৈরি হওয়া এই নিম্নচাপ অতি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের আকার ধারণ করতে পারে। সেই সময় বায়ুর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার হতে পারে। ১৭৫ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে ধেয়ে আসতে পারে ঝড়।

মৌসম ভবনের তরফেও শুক্রবারই জানানো হয়েছিল, বর্তমানে আরব সাগরে যে আবহাওয়া রয়েছে, তা নিম্নচাপকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত করার জন্য আদর্শ। আগামী ১৭ মে তা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে এবং পরদিনই গুজরাট উপকূল অতিক্রম করে তা পাকিস্তানে প্রবেশ করবে।

ইতিমধ্যেই কোঙ্কন উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আগামী ১৭ মে অবধি সমস্ত মৎসজীবীদের সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে। তৈরি রাখা হয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনীকেও। নিম্নচাপের জেরে ১৫ মে থেকেই কেরলে বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছিল। ইতিমধ্যেই কেরল ও কর্নাটকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। এর জেরে কেরলে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কেরল, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, গুজরাট ও মহারাষ্ট্রে ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে ৫০টি এনডিআরএফের দল।

রবিবার অবধি অতি ভারী বৃষ্টিপাত ও ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে কেরল, কর্নাটক ও গোয়ার একাধিক জেলায়। সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ সহ গুজরাটের একাধিক এলাকায় মঙ্গল বা বুধবার অবধি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।

আগামী দুই ঘণ্টার মধ্যে দিল্লি, পালওয়াল, মানেসর, গুরুগ্রাম, ফরিদাবাদ, বুলন্দশহর, নয়ডা, গাজিয়াবাদ, হাপুর ও সংলগ্ন এলাকাগুলিতে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় রাজ্যগুলি কতটা প্রস্তুত, তা যাচাই করতে আজই জরুরি বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন রাজ্যের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিকরা উপস্থিত থাকবেন। ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে বাঁচাতে বিভিন্ন শেল্টার, ত্রাণ সামগ্রী সহ সমগ্র উদ্ধারকার্যের প্রস্তুতি যাচাই করে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী।

জানা গিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় টাউকটে-র নাম দিয়েছে মায়ানমার। এর অর্থ হল অতি উচ্চ স্বরযুক্ত টিকটিকি। চলতি বছরে ভারতে এটিই প্রথম ঘূর্ণিঝড় হতে চলেছে। তবে এর তীব্রতা গতবছরের সুপার সাইক্লোন আমফানের মতো হবে কিনা, তা জানা যায়নি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*