রোজদিন ডেস্ক,কলকাতা :- ধর্মতলায় ডাক্তারদের ধর্না কর্মসূচির নির্দেশে কয়েকটি সংশোধন করল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, ২০০ থেকে ২৫০ জন প্রতিদিন ধর্নায় থাকতে পারবেন। সেই সংখ্যা কমিয়ে ১০০ জন করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি রাজ্যের তরফে ডাক্তারদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ২৫ ডিসেম্বরের কর্মসূচি বন্ধ রেখে ২৭ ডিসেম্বর করতে। সে ব্যাপারে ডাক্তারা রাজি কি না, সেটাও জানাতে হবে আদালতকে। এমনই নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের।
তবে ডাক্তারদের তরফে আইনজীবী শামিম আহমেদ আদালতকে জানান, এই মুহুর্তে তারিখের বিষয়ে আর কোনও পরিবর্তন তাঁদের পক্ষে করা সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে ডাক্তারদের জয়েন্ট ফোরামকে ২০ থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা ধর্নার অনুমতি দিয়েছিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের বক্তব্য, বড়দিনের ছুটির সময় কলকাতায় ভিড় হয়। এই সময় অন্তত ২৪ বা ২৫ ডিসেম্বর বন্ধ রাখা হোক কর্মসূচি।
রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ৯ অগস্টের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত করে চার্জশিট দিয়েছে সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে। সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি চলছে। সিবিআই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট না দেওয়ায় আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার প্রাক্তন ওসি জামিন পেয়েছেন। তার প্রতিবাদে ডাক্তাররা ধর্না করছেন। কিন্তু রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করে কেন এই ধর্না হবে? আন্দোলনকারীরা সিবিআইয়ের কাছে যেতে পারেন বলেও আদালতে জানিয়েছে রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে নিজেদের দাবিও তাঁরা জানাতে পারেন। এখন উৎসবের সময় কেন ডোরিনা ক্রসিং-এর মতো জায়গা আটকে ধর্না কর্মসূচি পালন করা হবে, সেই প্রশ্নও করেছে রাজ্য।
রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষের কি অধিকার নেই বড়দিন পালন করার? লোকজনের যাতায়াতের সমস্যা হবে কেন? যানজটের সৃষ্টি করে কেন এই সময় ধর্না হবে?” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি ভালো করে খতিয়ে দেখেননি। আর এর আগে দুর্গাপুজো, ছটপুজো, কালীপুজোর সময়ও এই ধরনের কর্মসূচি হয়েছে। সন্দীপ ঘোষের দোষ আছে কি না, তা বিচার করছে শীর্ষ আদালত। সেখানে গিয়েই নিজেদের বক্তব্য জানান চিকিৎসকরা।” অবিলম্বে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করুক ডিভিশন বেঞ্চ এমন আর্জিও জানান তিনি।
ডাক্তারদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “কোথায় ট্রাফিক জ্যাম হচ্ছে? আমরা সিসিটিভি ফুটেজ ও পুলিশের রেকর্ড থেকে দেখাতে পারি কোনও ট্রাফিক সমস্যা হচ্ছে না। ২৫ ডিসেম্বর লোকজন ধর্মতলায় আসে না। তারা যায় পার্কস্ট্রিটে। গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া আছে পুরো মঞ্চটা। কিছু লোক আসছে। দেখে চলে যাচ্ছে। আর এলে ভুল কোথায়? বড়দিনের জন্য আলাদা করে এই ধর্না অবস্থান কোনও সমস্যাই তৈরি করছে না। শান্তিপূর্ণ ধর্না অবস্থান করা নাগরিকের মৌলিক অধিকার।”
Be the first to comment