রোজদিন ডেস্ক :- স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে এবার চুরি ঠেকাতে অ্যাপ চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তর। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার করে বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম ভুয়ো বিল করে সরকারের কাছ থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরে অভিযোগ জমা পড়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানেও বিষয়টা যায়। তারপরই এই চুরি ঠেকাতে পদক্ষেপ করে একগুচ্ছ পরিকল্পনা করে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদনের পর ওই পরিকল্পনা এবার বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। এই চুরি ঠেকাতে একটি অ্যাপ তৈরি করতে চলেছে রাজ্য সরকার। একইসঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা মনে করছেন, ওই অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন থেকে ডিসচার্জ পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপ করা হলে ভুয়ো বিল করে চুরি ঠেকানো সম্ভব হবে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তা বলেন, ‘আরজি কর কাণ্ডের জেরে ডাক্তারদের কর্মবিরতির সময় বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলি থেকে প্রচুর টাকার বিল এসেছিল। কর্মবিরতিতে যুক্ত থাকা ডাক্তারদের অনেকেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বেসরকারি নার্সিংহোম ও হাসপাতালে চিকিৎসা করেছেন। ইতিমধ্যেই বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী ওই ঘটনার তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন।’
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার করে যাঁরা চিকিৎসা নেবেন, সেই সমস্ত হাসপাতালকে একটি নির্দিষ্ট অ্যাপের সাহায্যে রোগীর ছবি ও ভিডিও তুলে স্বাস্থ্যভবনে পাঠাতে হবে। হাসপাতালে ভর্তি, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অপারেশনের আগে ও পরে, ছুটির সময়ের ছবি পাঠাতে হবে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে রোগী ভর্তি হলেই সেই তথ্য ছবি সহ স্বাস্থ্যভবনে পাঠাতে হবে। অর্থাৎ প্রতিটি ধাপে রোগী হাসপাতালে আছেন কি না, তা নিশ্চিত করা হবে। একইসঙ্গে নির্দিষ্ট সার্ভারে ওই রোগীর জিপিএস লোকেশন পাঠাতে হবে। একবার তথ্য ও জিপিএস লোকেশন পাঠানো হয়ে গেলে তা আর এডিট করা যাবে না। রোগী স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ডায়ালিসিস, কেমোথেরাপি বা অন্যান্য চিকিৎসা করালে তাঁকেও ওই একই নিয়ম মানতে হবে। এই পুরো প্রযুক্তি সম্পর্কে হাসপাতালগুলিকে আগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যে অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য পাঠাতে হবে, তা হাসপাতালের ৫০ মিটার ব্যাসার্ধের বাইরে কাজ করবে না। অর্থাৎ রোগী যে হাসপাতালের বাইরে নেই, তা নিশ্চিত করবে জিপিএস লোকেশন। সার্ভারে আপলোড করা ছবি, লোকেশন ও ভিডিও জাল কি না, তা পরীক্ষা করবে এআই। তথ্যে স্বাস্থ্য দফতর সন্তুষ্ট হলে তবেই হাসপাতালকে টাকা মেটানো হবে। ভুয়ো প্রমাণিত হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। ভুল হলে সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোম ও হাসপাতালকে আর্থিক জরিমানাও করা হবে।
Be the first to comment