যার জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি জ্যোতি বসু, সেই প্রকাশ কারাটের হাতেই আজ উদ্বোধন হল জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রের

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা : – যার জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন নি জ্যোতি বসু, আজ তাঁরই হাত ধরে উদ্বোধন হল জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পর্ব। এদিন দুই তলা এই ভবনের উদ্বোধন করলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কো-অর্ডিনেটর প্রকাশ কারাট।

অতীতে জ্যোতি বসু নিজে উল্লেখ করেছিলেন, তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হতে না দেওয়াটা ঐতিহাসিক ভুল। সেই ভুলের কান্ডারি হিসাবে প্রকাশ কারাটকেই চিহ্নিত করে রাজনৈতিক মহল। শুক্রবার তাঁর হাত ধরে জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত গবেষণা কেন্দ্রের উদ্বোধন অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।
এদিন কারাট বলেন, “বাবরি মসজিদ যখন ভাঙা হয়, সেই সময় জ্যোতি বসুর ভূমিকা ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। এই ঘটনাকে তিনি বর্বর-দের কাজ বলেছিলেন। এখন এই সময়েও তিনি প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ। উগ্র হিন্দুত্ববাদের নামে হিন্দু রাষ্ট্র নির্মাণের চেষ্টা চলছে ৷ সেখানে দাঁড়িয়ে তাঁর দেখানো পথ তাঁর চিন্তাভাবনাকে আরও বলীয়ান করতে হবে।”
রাজনৈতিক মহলের সকলে জানে ১৯৯৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর, প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার প্রধান অন্তরায় ছিলেন এই কারাট ও তাঁর গোষ্ঠী। সেই ঘটনাকে জ্যোতি বসু নিজেই ঐতিহাসিক ভুল বলেছিলেন। ২৯ বছর পর জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পর্বের উদ্বোধন করলেন সেই প্রকাশ কারাটই। তিনি এখন সিপিএমের পলিট ব্যুরো কো-অর্ডিনেটর।
এই বিশেষ দিনে পুরনো বাম কর্মী-সমর্থকদের মনে পড়ছে জ্যোতি বসুর অনুগামী হিসাবে পরিচিত লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কথা। ২০০৮ সালে প্রথম ইউপিএ সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে বামেরা। সেই সময় দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হতে পারেননি স্পিকার পদে থাকা সোমনাথ। তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে সিপিএম। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই আক্ষেপ ছিল সোমনাথের।
আপাতত এই গবেষণা কেন্দ্রের দু’টি তলা তৈরি হয়েছে। ভবনটি ছ’তলা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নবনির্মিত ভবনে রাখা হয়েছে জ্যোতি বসুর ব্যবহার করা খাট থেকে বসার চেয়ার, তাঁর পাওয়া পুরস্কার, স্মারক থেকে শুরু করে তাঁর মোমের মূর্তি। একাংশে চালু হয়েছে লাইব্রেরি। সামনে থাকছে বিরাট জলাশয়। এদিন জ্যোতি বসুর ১২ মাসের ২৪টি ঘটনার সংকলন এবং এই গবেষণা কেন্দ্র সম্পর্কিত নানা বিষয় নিয়ে প্রকাশিত হয় একটি ডায়রি। পাশাপশি দু’টি গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশ করেন অধ্যাপিকা ঈশিতা মুখোপাধ্যায়।
এদিন উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বৃন্দা কারাট, ইউসুফ তারিগামী, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, বিমান বসু, সুহাসিনী আলী-সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গরা। পাঁচ একর জমির উপর এই গবেষণা কেন্দ্র-সহ আরও অনেক কর্মকাণ্ড হবে এই গবেষণা কেন্দ্রে। উল্লেখ্য, জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রের জন্য এই জমি পেতে অনেক লড়াই করতে হয়েছে সিপিএমকে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*