রোজদিন ডেস্ক :- সংবিধান নিয়ে বিতর্কে কংগ্রেসকে কার্যত তুলোধনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সংবিধান প্রণয়ন থেকে শুরু করে একাধিক ইস্যুতে প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি এবং তাঁর পুত্র প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধিকেও আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
সংবিধান প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে এদিন তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন কংগ্রেস সরকারের আমলে বারবার সংবিধান রক্তাক্ত হয়েছে। গণতন্ত্র আহত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ১৯৭৫ সালে সংবিধানের ২৫ বছর পূর্তিতে জরুরি অবস্থা জারির কথা ফের উত্থাপন করেন মোদি। গান্ধি পরিবারকে নিশানা করে তিনি বলেন, “এই পরিবার বিভিন্নভাবে সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ করেছে। এই পরিবারই দেশে ৫৫ বছর ধরে সরকারে ছিল।” এমনকী জরুরি অবস্থা নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করার সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “কংগ্রেসের শরীরে যে পাপ লেগে রয়েছে, তা ধুলেও যাবে না।”
শুধু পূর্বসূরিরাই নয়, গান্ধি পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম অর্থাৎ রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধিও একই কাজ করে চলেছেন বলে তোপ দাগেন লোকসভার নেতা মোদি। তিনি জানান, তাঁর মতো অনেকেই এখন সংসদে রয়েছেন, যাঁদের রাজনীতিতে তেমন কোনও প্রেক্ষাপট নেই। কিন্তু সংবিধানের জোরেই তাঁরা এখানে পৌঁছতে পেরেছেন।
রাহুল গান্ধির নামোল্লেখ না করেই প্রধানমন্ত্রী তাঁকে আক্রমণ করেন। তিনি মনে করিয়ে দেন, ইউপিএ জমানায় মন্ত্রিসভায় পাশ হয়ে যাওয়া অর্ডিন্যান্স প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলেছিলেন রাহুল গান্ধি। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিং। পরে ক্যাবিনেট নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। সেই সময় ন্যাশনাল অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলকে (এনএসি) ক্যাবিনেটের উপরে স্থান দেওয়া হয়েছিল। আর এনএসি’র মাথায় ছিলেন সোনিয়া গান্ধি।
জাতভিত্তিক জনগণনার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি জানান, সংবিধান প্রণেতারা ধর্ম ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে সংরক্ষণ চাননি। তার সঙ্গে জড়িয়ে ছিল দেশের ঐক্য এবং অখণ্ডতা। কিন্তু ক্ষমতার লোভে এবং ভোটব্যাঙ্ক তুষ্টিকরণে সংবিধানকে লঙ্ঘন করার চেষ্টা চালিয়েছে কংগ্রেস। তিনি এও জানান, ‘ইন্দিরা গান্ধির সরকারের আমলে ‘গরিবি হঠাও’ সবচয়ে বড় মিথ্যা। তাঁর পর প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এর ফায়দা তুলেছে বলে অভিযোগ তোলেন প্রধানমন্ত্রী।’
সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বীকার করে নেন, বিজেপি সরকারও সংবিধান সংশোধন করেছে। তাঁর দাবি, সেই সংশোধন দেশের ঐক্যের স্বার্থে। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ করা হয়েছে দেশের ঐক্যের কথা ভেবে। দেশের ঐক্য নিয়ে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিজেপি সরকারের, একদেশ এক রেশন কার্ড, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, এক দেশ এক ট্যাক্স জিএসটি-র কথা তোলেন। বক্তৃতার শেষে দেশের উন্নয়নে ১১টি প্রস্তাব পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এর মধ্যে অন্যতম দুর্নীতির প্রতি সরকারের জিরো টলারেন্স।
Be the first to comment