রোজদিন ডেস্ক :- ‘এক দেশ, এক ভোট’ বিলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার সায় মিলেছে আগেই। এবার লোকসভায় পেশ হল ‘এক দেশ, এক ভোট’ বিল। মঙ্গলবার সংসদের নিম্নকক্ষে এই বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল। এই বিল পেশ হতেই বিরোধীদের হইহট্টগোল শুরু হয়ে যায় লোকসভায়। কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি-সহ বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অন্য দলগুলিও এই বিলের বিরোধিতা করে। এই বিল নিয়ে লোকসভায় ভোটাভুটির দাবি করলেন বিরোধী সাংসদরা। নতুন সংসদ ভবনে প্রথম ভোটাভুটি।
‘এক দেশ এক ভোট’ সংক্রান্ত দু’টি বিল মঙ্গলবার পেশ করা হয়। সংবিধান (১২৯তম সংশোধনী) বিল এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আইন (সংশোধনী) বিল। কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি-সহ বিরোধী সাংসদদের মূল বক্তব্য একই। এই বিল সংবিধানের পরিপন্থী বলে মনে করছেন বিরোধীরা। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই বিল সংবিধানের মূল কাঠামোই আঘাত করবে। বিজেপি কী ভাবে এই বিল লোকসভায় পাশ করাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ডিএমকে। স্তালিনের দলের সাংসদ টিআর বালুর বক্তব্য, “এই সরকারের যখন দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাই নেই, তারা কিসের ভরসায় এই বিল পেশ করছে সংসদে?” আপত্তি জানিয়েছেন মিম সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসিও।
তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, এক দিকে যখন সংবিধান-বিতর্ক চলছে, তখন বিজেপি সংবিধান সংশোধনের বিল পেশ করছে। এটি গণতন্ত্রের উপর নির্লজ্জ আক্রমণ ছাড়া আর কিছুই নয়। ‘এক দেশ এক ভোট’ বিলের লক্ষ্য সাধারণ মানুষের নিয়মিত ভোটদানের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া।”
The BJP’s brazen attempt to introduce a CONSTITUTIONAL AMENDMENT BILL today, WHILE THE CONSTITUTION DEBATE IS STILL UNDERWAY in Parliament, is nothing short of an unashamed attack on democracy. The One Nation One Election bill seeks to ROB THE PEOPLE OF THEIR FUNDAMENTAL RIGHT to… pic.twitter.com/ubSbQiS8sZ
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) December 17, 2024
অন্যদিকে ইতিমধ্যেই বিলের বিপক্ষে লোকসভার সেক্রেটরিকে নোটিশ দিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ মনীশ তিওয়ারি। তাঁর দাবি, এই বিল দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক। তাঁর কথায়, “এই বিল দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে সরাসরি আঘাত করবে। এই ধরণের পদক্ষেপে রাজ্যের স্বায়ত্তশ্বাসন, স্থানীয় গণতান্ত্রিক অধিকার ও ক্ষমতা কেন্দ্রীয়করণের ঝুঁকি রয়েছে।”
অবশ্য, বিজেপির দাবি দেশ তথা দেশবাসীর কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসকে আক্রমণ করে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেন, “স্বাধীনতার পর ভারতে দুই দশক ধরে এক দেশ এক নির্বাচন ছিল। কংগ্রেস ৩৫৬ ধারার অপব্যবহার করার পর কয়েকটি রাজ্যে আলাদাভাবে নির্বাচন করা হয়।”
তবে, এই বিলে সমর্থন জানিয়েছে বিজেপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শরিক দল টিডিপি। সম্মতি জানিয়েছে শিন্ডে শিবির। কিন্তু এই বিল পেশ হলে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ আপত্তি জানতে পারে বলে আগাম আঁচ করতে পেরেছিল মোদির মন্ত্রীসভা। তাই অমিত শা এই বিল দু’টি যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেন মেঘওয়ালকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা মেনে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী বিল দু’টি নিয়ে আলোচনার জন্য তাঁরা যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠাবেন।
Be the first to comment