রোজদিন ডেস্ক :- রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়ের অপসারণের দাবিতে সংসদের উচ্চকক্ষে আস্থা ভোটের নোটিশ দিল বিরোধী দলগুলি। চেয়ারম্যান রাজ্যসভার কাজকর্ম পরিচালনায় পক্ষপাত করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা সাংসদরা। মঙ্গলবার কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ এবং নাসির হুসেন উচ্চকক্ষের মহাসচিব পিসি মোদির কাছে এই নোটিশ জমা দেন।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক কংগ্রেস, আরজেডি, তৃণমূল, সিপিআই, সিপিআই-এম, জেএমএম, আপ, ডিএমকের সাংসদরা এই নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন। যদিও কংগ্রেসের কয়েকজন শীর্ষ নেতা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে আনা আস্থা ভোটের নোটিশটিতে স্বাক্ষর করেননি। সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, সংসদীয় কমিটির চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধি এবং বিভিন্ন বিরোধী দলের কয়েকজন সংসদীয় দলনেতা এই তালিকায় রয়েছেন বলে সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এই প্রথম, জানান কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ। তিনি বলেন, “বিগত ৭২ বছরে এই প্রথম যে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিরোধীরা অনাস্থা আনল। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে পরিস্থিতি কতটা খারাপ হয়েছে। তিনি যেভাবে রাজ্যসভা চালাচ্ছেন, তাতে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনতে বাধ্য হয়েছে।”
বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তিনি আরও বলেন, “সংসদের দুই কক্ষে সচল থাকুক, এটা সরকার একেবারেই চায় না। এটা পরিষ্কার। গতকাল সংসদীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজু নিজে চেয়ারম্যান ধনকড়কে বলেছেন, লোকসভায় আদানি ইস্যুতে গোলমাল হচ্ছে। এরকম হলে আমরাও রাজ্যসভা চলতে দেব না। সেখানে জেপি নাড্ডাও ছিলেন। এমনটা এই প্রথম শুনলাম। চেয়ারম্যানও এই বিষয়টিকে সমর্থন জানাচ্ছেন। তাঁর নিরপেক্ষ থাকা উচিত।”
প্রসঙ্গত, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয় ২৫ নভেম্বর৷ প্রথম থেকেই আদানি-সহ একাধিক ইস্যুতে আলোচনার দাবিতে উত্তাল হয় সংসদের দুই কক্ষ। এর আগে সংসদের বাদল অধিবেশনেও বিরোধীরা চেয়ারম্যান ধনকড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার তোড়জোড় করেছিল। কিন্তু সেইবার অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল ১২ জুলাই থেকে আগস্টের ১২ তারিখ পর্যন্ত। কিন্তু একদিন আগেই অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করেন উচ্চকক্ষের চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়।
বিরোধীদের দাবি, সেইবার উপ-রাষ্ট্রপতিকে অপসারিত করতে ৮০ জন বিরোধী সাংসদ নোটিশে স্বাক্ষর করে ফেলেছিলেন। এদিকে একদিন আগেই সংসদ মুলতুবি হয়ে যাওয়ায় বিরোধীরা প্রস্তাব আনতে পারেননি। ভারতের সংসদীয় ইতিহাসে এর আগে রাজ্যসভার কোনও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এমন নোটিশ আনার ঘটনা ঘটেনি। তবে ২০২০ সাললে ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল।
রাজ্যসভায় বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়ের মনোমালিন্য নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি সেই আগুনে ঘি ঢালেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে জর্জ সোরসের যোগাযোগের বিষয়টি। চেয়ারম্যান ধনকড় সরকার পক্ষের সাংসদদের এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার অনুমতি দেন। কিন্তু অন্যদিকে তিনি বিরোধী দলগুলির আলোচনার দাবি মেনে নেননি। এরপরই চটে যায় কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির সাংসদরা।
Be the first to comment