ইউপিএসসির আইএসএস পরীক্ষায় শীর্ষে দুই বঙ্গতনয়, শুভেচ্ছা বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক :-  ইউপিএসসির আইএসএস পরীক্ষায় বাংলার জয়জয়কার। তালিকার শীর্ষে বাংলার দুই কৃতী ছাত্র। প্রথম হয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের সিঞ্চনস্নিগ্ধ অধিকারী। তাঁর মোট প্রাপ্ত নম্বর ৭৩৮। দ্বিতীয় পূর্ব বর্ধমানের বিল্টু মাজি। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৮০।

বৃহস্পতিবার ইউপিএসসি-র ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিস (আইএসএস) পরীক্ষার ফলপ্রকাশ হয়েছে। তাতে প্রথম হয়েছেন বছর সাতাশের সিঞ্চনস্নিগ্ধ। আসানসোলের ইসমাইলের বাসিন্দা তিনি। আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের কৃতী ছাত্র ছিলেন সিঞ্চন। একেবারে মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে সিঞ্চনের এই সাফল্য।এই দুই বঙ্গ তনয়ের সাফল্যের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
&Glad to note that the first and the second positions in the UPSC-conducted prestigious Indian Statistical Service examination this year have been won over by two boys from Bengal. While I congratulate the two successful winners, Sinchan and Biltu, I note that our emphasis on…

;পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল শহরের ইসমাইলে মাদার টেরেজা সরণিতে খুব সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হয়ে ওঠা সিঞ্চনের। তাঁর বাবা প্রদীপ অধিকারী আসানসোল মাইন্স বোর্ড অফ হেলথের কর্মী। বহুবছর মাইন্স বোর্ড অফ হেলথের অবস্থাও ভালো নয়। সেই কারণে খুব সচ্ছল পরিবারে বড় হননি সিঞ্চন। মা সুজাতা অধিকারী গৃহবধূ। ছোট থেকে আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনেই পড়াশুনো করেছেন সিঞ্চন স্নিগ্ধ অধিকারী। পরবর্তীকালে কলকাতার আইএসআই থেকে স্ট্যাটিস্টিক্সের উপর মাস্টার্স করেন তিনি। মেডিক্যালে ১৬৮ র‍্যাংক করেছিলেন সিঞ্চন। ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও র‍্যাংক করেছিলেন সপ্তম। কিন্তু সিঞ্চনের ইচ্ছে ছিল স্ট্যাটিস্টিক্স নিয়ে পড়ার। তাই প্রথমে বি স্ট্যাট ও পরে এম স্ট্যাট করেছেন এই কৃতী ছাত্র। ইচ্ছে ছিল আইএএস হওয়া। প্রথম ইউপিএসসি-তে সফলতা আসেনি। আর তার পরেই পাখির চোখ করে কঠিন অধ্যাবসায় শুরু করেন সিঞ্চনস্নিগ্ধ অধিকারী। এবার তাক লাগানো রেজাল্ট তাঁর। গোটা দেশকে চমকে দিয়ে প্রথম হয়েছেন আসানসোলের সিঞ্চনস্নিগ্ধ অধিকারী।

অন্যদিকে, আরেক বঙ্গতনয় ইউপিএসসি-র ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করলেন পূর্ব বর্ধমানের বিল্টু মাজি। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৮০। তাঁর বাড়ি আউশগ্রাম -২ ব্লকের রামনগর পঞ্চায়েতের পান্ডুক গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিল্টু মাজি গ্রামের দীননাথপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। পরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করার পরে স্ট্যাটিস্টিক্সে অনার্স পাশ করেন। এরপর ইন্ডিয়া পোস্টে চাকরি পান। বীরভূম জেলার রূপপুর গ্রামীণ পোস্ট অফিসে পোস্ট মাস্টার হিসেবে যোগ দেন। বিল্টু মাজির বাবা জয়দেব মাজি। তাঁদের বিঘা দুয়েক জমি আছে। সেই জমিতে চাষ আবাদ করেই সংসার চলে। মা সুমিত্রা কাঁথাস্টিচের কাজ করেন। সংসারে অভাব থাকায় ইউপিএসসি-র জন্য বিল্টু মাজিকে কোনও কোচিং দিতে পারেনি তাঁর পরিবার। তবে মনের জেদকে সম্বল করে শুরু হয় বিল্টুর লড়াই। প্রথম বছর ইউপিএসসিতে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ইন্টারভিউতে কাট অফ থেকে ১৬ নম্বর কম থাকায় সফল হতে পারেননি। দ্বিতীয়বার ফের পরীক্ষায় বসেন তিনি। কিন্তু দু’নম্বরের জন্য লিখিত পরীক্ষায় সফল হননি বিল্টু। পরপর দু’বার সাফল্য না আসায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। কিন্তু তাঁর মা ছেলের মনোবল ফেরাতে তাঁকে উৎসাহ দিতে থাকেন। তৃতীয়বার পরীক্ষা দিতেই আসে সাফল্য। দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন বিল্টু মাজি।
এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে এই দুই কৃতী বঙ্গ সন্তানকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে তাঁরা আবার ভারতের প্রশাসনকে নেতৃত্ব দেবে।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*