তাঁর নির্দেশমাত্রই কাজ। প্রশাসনিক সমস্ত কাজের বিষয়ে এতটাই তৎপরতা প্রত্যাশা করেন তিনি। আর সেই কাজ যদি হয় শাস্তিমূলক, তবে তাতে দেরি করা চলে না মোটেই। সোমবারও তেমনটাই হল পুরুলিয়ায়। বলরামপুরে বেআইনিভাবে জমির কাগজপত্র তৈরি করা দোকান মালিকদের গ্রেপ্তারির নির্দেশ প্রশাসনিক সভা থেকে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সঙ্গে সঙ্গেই ওসির নির্দেশে দুটি দোকান সিল করে দেওয়া হয়েছে। মালিকদের থানায় ডেকে শুরু হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ।
পুরুলিয়া জেলায় ভূমি দপ্তরের সমস্যা বহুদিনের। হুড়া, বলরামপুর ব্লকে জমির মিউটেশন নিয়ে নানা অভিযোগ জমা হচ্ছিল। এ নিয়ে প্রথম সরব হন জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে অবশ্য তেমন সুরাহা হয়নি। এরপর সম্প্রতি হুড়ায় একই অভিযোগ বাড়তে থাকায় বিএলআরও অফিসে দাঁড়িয়েই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রসেনজিৎ মাহাত প্রতিবাদে মুখর হন। কেন সরকারি আধিকারিকরা এমনটা করছেন, এই প্রশ্ন তুলে শোরগোল ফেলে দেন। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও এই সংক্রান্ত অভিযোগের পাহাড় জমতে থাকে।
এরপর সোমবার পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে সেসব অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে আনেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি জানান, বলরামপুরের বিএলআরও অফিসের সামনে দুটি দোকানে বেআইনি কাজ হয়। এখানে জমির ভুয়ো নথিপত্র তৈরি হয়। এদিন তিনি মঞ্চে ডেকে নিয়েছিলেন অভিযোগকারী দু’জনকে। তাঁরা নিতান্তই সাধারণ গ্রামবাসী। তখনই কৌতূহল হচ্ছিল সকলের, এঁরা কারা? পরে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সবটা ভাঙেন। জানান, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বিএলআরও অফিসে গিয়েও কাজ পাননি। তাঁরাই অভিযোগকারী।
মুখ্যমন্ত্রী বলরামপুর ও হুড়ার বিডিওদের দাঁড় করিয়ে জমির বেআইনি কাজকর্ম নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। বলরামপুরের ওই দুটি দোকানের মালিকদের গ্রেপ্তারির নির্দেশ দেন। বলেন, ”আমি বলছি মানে, এখনই কাজ হয়ে যাবে। তবেই তাকে কাজ বলে।” সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হন বলরামপুর থানার ওসি। তিনি পুলিশকে পাঠিয়ে দোকান দুটি সিল করিয়ে দেন। দুই মালিককে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে বলে খবর। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। এ বিষয়ে পুরুলিয়ার এসপি এস সেলভামুরুগন বলেন, ”মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো আমরা কাজ করেছি। ওই দুই দোকানদারকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। শুরু হয়েছে জেরা। দোকান দুটি সিল করে দিয়েছি।”
Be the first to comment