কয়লা ও গরু পাচারকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রকে বারবার তলব করেও কোনও লাভ হয়নি। হাজিরা দেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত জানা গিয়েছে, দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন বিনয়। এবার তাঁকে ফেরাতে আরও তৎপর হল তদন্তকারীরা। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আবেদনের ভিত্তিতে জামিন আযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হল বিনয় মিশ্রের বিরুদ্ধে। বিনয়কে দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে এই পরোয়ানা সুবিধা দেবে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
কয়লা পাচার-কাণ্ডে বিনয়কে চার বার তলব করেছিল ইডি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তাই এবার ইডি যে কিছুটা কৌশলি পদক্ষেপ করল, তা বলাই চলে। দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্টে বিনয়ের বিরুদ্ধে জামিন আযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানিয়েছিল ইডি। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই বিনয় মিশ্রের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করতে চেয়েছে সিবিআই। পরপর কয়লা ও গরু পাচারকাণ্ডের জন্য রেড কর্নার নোটিস জারির জন্য তৎপর হয় তদন্তকারীরা। ইন্টারপোলে নোটিস পাঠানোর আর্জিও জানানো হয়। মনে করা হচ্ছে জামিন আযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলে রেড কর্নার নোটিস জারির ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।
কয়লা ও গরু পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়েছেন, তিনি ভারতের নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। এখন তিনি দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াটুরের বাসিন্দা। দুবাইয়ের দূতাবাসে তিনি পাসপোর্টও জমা দিয়েছেন বলেই দাবি করেছেন। এদিকে প্রথম রেড কর্নার নোটিস যেহেতু ভারতীয় হিসাবে জারি হয়েছে, তাই তিনি ভারতে না থাকায় তাঁকে এই নোটিসের মাধ্যমে দেশে ফেরানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। তাই তিনি বর্তমানে যে দেশের নাগরিক সেই দেশের পাসপোর্টের নম্বরের সূত্র ধরে ইন্টারপোলের দ্বারস্থ হতে চায় সিবিআই।
এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের রায় খুঁটিয়ে পড়ার পরই বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসের কর্তাদের সঙ্গে সিবিআই সদর দফতরে থাকা দিল্লির কর্তাদের একপ্রস্থ বৈঠক হয়। বিনয় মিশ্রকে কী ভাবে দেশে ফেরানো যায়, সেই নিয়ে নিয়ে আলোচনা হয় দিল্লি ও কলকাতার সিবিআই কর্তা ব্যক্তিদের মধ্যে। সূত্রের খবর মারফৎ জানা গিয়েছে, কোন পথে বিনয় মিশ্রকে দেশে ফিরিয়ে হেফাজতে নেওয়া যায়, তা নিয়ে বিদেশমন্ত্রকের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
গরু পাচার ও কয়লা পাচারে প্রভাবশালীদের কাছে টাকা লেনদেনের অন্যতম মাধ্যম ছিলেন বিনয়। যদিও একাধিকবার তিনি সে সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছেন। তবে একদিকে ইডি যখন তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে, সিবিআইও এফআইআর দায়ের করেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তদন্তকারীরা। কয়লা ও গরুপাচার কাণ্ডে পলাতক বিনয় মিশ্র গত বছরই ভারতীয় নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এর পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব নেন তিনি।
Be the first to comment