নারদ মামলায় চার হেভিওয়েট নেতার আপাতত স্বস্তি। কলকাতা হাইকোর্টে জামিন মঞ্জুর না হলেও, তাঁরা গৃহবন্দি অবস্থায় থাকবেন। জামিন পাবেন কিনা, তা বিচার করবে বৃহত্তর বেঞ্চ। শুক্রবারই বৃহত্তর বেঞ্চে যাচ্ছে মামলা। দ্রুত বেঞ্চ গঠন করে শুনানি শুরুর আবেদন অভিযুক্তদের আইনজীবীদের।
হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেস বিন্দাল তাঁদের গৃহবন্দি রাখার পক্ষে ছিলেন, অপর বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের জামিন দেওয়ার পক্ষে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশ, দুই বিচারপতির মতপার্থক্য হওয়ায় মামলা বৃহত্তর বেঞ্চে যাবে। এখানে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হেভিওয়েটরা গৃহবন্দি থাকবেন।
শুরু থেকেই মূলত হেভিওয়েটদের জামিন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বিষয়ে মতপার্থক্য হচ্ছিল। কোনও মামলার ক্ষেত্রে ডিভিশন বেঞ্চে একজন বিচারপতি অন্য মত পোষণ করলেই, মামলা বৃহত্তর বেঞ্চে যাবে। সেই বেঞ্চ অবশ্য দুই কিংবা তিন জন বিচারপতির হবে, এমন কোনও কথা নেই। নিয়ম মোতাবেক, কেবল একজন বিচারপতিকে দিয়েও তৈরি হতে পারে বৃহত্তর বেঞ্চ।
এদিনের শুনানির প্রেক্ষিতে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য , ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেস বিন্দাল যে গৃহবন্দি থাকার নির্দেশ দিচ্ছেন, তাতে তিনি মান্যতা দিচ্ছেন না। তিনি চান, সব অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হোক। প্রত্যেক অভিযুক্তের আইনজীবীরাই এ বিষয়ে জোরাল সওয়াল করেন।
বিশেষ করে অভিষেক মনু সিঙ্ভির বক্তব্য ছিল, কোভিড পরিস্থিতিতে রাজ্যে ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। গৃহবন্দি হলে কীভাবে তাঁরা কাজ করবেন? সরকারি ফাইল কি তবে বাড়ি থেকে পাঠাবেন? সেটাও কি সম্ভব? এক্ষেত্রে বাড়ি থেকেই সমস্ত প্রশাসনিক কাজ করার নির্দেশ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল তোলেন তিনি। এরপর আদালত তা স্পষ্ট করে দেয়, বাড়ি বসেই কোভিড মোকাবিলায় কাজ করতে পারবেন ফিরহাদ-সুব্রত।
সলিসেটর জেনারেল ও অ্যাটর্ন জেনারেল হেভিওয়েটদের জামিনের বিরোধিতা করেছিলেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেস বিন্দাল সিবিআই-এর দাবি নাকচ করে দেয়। পাশাপাশি নারদ মামলা অন্যত্র স্থানান্তরিত হবে কিনা, তা সিদ্ধান্ত হবে বেলা ২টোর সময়ে।
তবে এক্ষেত্রে একটি সমস্যা রয়েছে। আগামিকাল অর্থাৎ শনিবার এমনিতে বন্ধ আদালত। তারপরের দিন রবিবার। এদিকে, আজ বেলা ২টো থেকে বৃহত্তর বেঞ্চে মামলা শুরু হলে, তা কোনও ভাবেই ২ ঘণ্টার মধ্যে শেষ হবে না। সেক্ষেত্রে হেভিওয়েটদের আইনজীবীরা আর্জি জানিয়েছেন যাতে শনিবারও এই মামলার শুনানি হয়। এ প্রসঙ্গে মদন মিত্রের আইনজীবী বলেছেন, “দুই বিচারপতির মধ্যে মতপার্থক্য হয়েছে। বিষয়টি বৃহত্তর বেঞ্চে যাচ্ছে। হাউস অ্যারেস্টের অর্ডার আছে। তবে সরকারি সব কাজকর্ম বাড়ি থেকে করতে পারবেন।”
Be the first to comment