ত্রিপুরা কাণ্ডে এবার মুখোমুখি দুই হেভিওয়েট ৷ একজন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা নেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ আর অন্যজন তৃণমূলের একেবারে সামনের সারিতে থাকা কুণাল ঘোষ ৷ তবে এই যুদ্ধক্ষেত্র কোনও মাঠ, ময়দান নয় ৷ তাঁদের লড়াই জমেছে ভার্চুয়াল দেওয়ালে ৷ ত্রিপুরায় তৃণমূলের তরুণ নেতানেত্রীদের পুলিশ জল খাইয়েছিল, নাকি খাওয়ায়নি, আপাতত সেই নিয়েই চলছে ডুয়েল ৷ টুইট, পাল্টা টুইটে বাড়ছে বিতর্ক ৷
সম্প্রতি ত্রিপুরায় গিয়ে হামলার মুখে পড়েন তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতানেত্রীরা ৷ তাঁদের দাবি, পাহাড়ি পথে তাঁদের উপর হামলা চালানো হয় ৷ এমনকী, ঘটনার পর পুলিশ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেও অভিযোগ ৷ উল্টে আক্রান্তদেরই আটকে রাখা হয় ৷ তাঁদের চিকিৎসা করানো দূরে থাক, পুলিশ ধৃত তৃণমূলীদের নাকি জল পর্যন্ত খেতে দেয়নি ৷ পরবর্তীতে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও দাবি করেন, তাঁদের দলের ছেলেমেয়েদের টানা ৩৬ ঘণ্টা পানীয় জল দেয়নি ত্রিপুরার পুলিশ!
মমতার এই দাবির জবাব দিতেই আসরে নেমেছেন একদা তাঁর বিশ্বস্ত সেনাপতি শুভেন্দু ৷ নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে ভিডিয়োর একটি কোলাজ আপলোড করেছেন তিনি ৷ তাতে ত্রিপুরায় আক্রান্ত তৃণমূল যুবদের চিকিৎসার ছবি যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে পুলিশের সামনেই তাঁদের জল খাওয়ার দৃশ্যও ৷ শুভেন্দুর বার্তা স্পষ্ট ৷ তাঁর বক্তব্য, ত্রিপুরা পুলিশের গায়ে অমানবিক আচরণের তকমা সেঁটে দেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল, তা একেবারেই ভিত্তিহীন ৷ এমনকী, এ নিয়ে স্বয়ং তৃণমূল নেত্রীও যে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন, তাও দ্ব্যর্থহীন ভাষাতেই বলেছেন শুভেন্দু ৷ এর জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে ‘মিথ্যাশ্রী’ পুরস্কার দেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছেন শুভেন্দু ।
এদিকে, এই টুইট চোখে পড়তেই তেতে উঠেছেন কুণাল ঘোষ ৷ সরাসরি নিশানা করেছেন শুভেন্দুকে ৷ কুণালের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী নন, শুভেন্দুই মিথ্যাবাদী ৷ কারণ, ত্রিপুরার ওই ঘটনা প্রসঙ্গে মিথ্যা বলছেন তিনি ৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, তাঁর দলের ছেলেমেয়েদের 36 ঘণ্টা এক গ্লাসও পানীয় জল দেওয়া হয়নি ৷ আর এর স্বপক্ষে কুণালের দাবি, শুভেন্দুর ভিডিয়োয় যে জল খাওয়ার ছবি দেখা যাচ্ছে, সেই জল দলের কর্মীরাই নিয়ে গিয়েছিলেন ৷ অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য যে মিথ্যা, তা শুভেন্দুর ভিডিয়োয় প্রমাণিত হয় না ৷
এর পাশাপাশি তৃণমূল নেতার অভিযোগ, ঘটনার পর আক্রান্তদের শুধু ব্লাড প্রেশার দেখেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ যদিও শুভেন্দুর ভিডিয়োয় আক্রান্তকে নিজের আঘাত সম্পর্কে পুলিশ এবং চিকিৎকসককে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘একটুখানি ব্লিডিং হয়ে কালো হয়ে গিয়েছিল ৷ চুলের ভিতর কাচ ঢুকে গিয়েছিল ৷’’ যার জবাবে চিকিৎসক বলছেন, ‘‘দেখব দেখব ৷’’ অর্থাৎ ঘটনার পর আক্রান্তদের চিকিৎসা যে করানো হয়েছিল, সেটা স্পষ্ট ৷ কিন্তু সেটা কতটা, তা বোঝা মুশকিল ৷
Be the first to comment