সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি বুধবার বিজেপিকে ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের দেশ থেকে উৎখাত করবোই। বুধবার বিধানসভায় এমনই বার্তা দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় এখন বাজেট অধিবেশন চলছে। রাজ্যপালের ভাষণের পরে জবাবি ভাষণ দিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের একসাথে এগিয়ে আসা দরকার। মান্নান দা, সুজনবাবুদের বলি যে লড়াইটা করছি সেই লড়াইটা দেশের জন্য চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী কী বললেন দেখে নিন এক নজরে-
স্পিকারের কাছে প্রথমে অনুমতি নিতে হয়। স্পিকার অনুমতি দিলে তবেই বক্তব্য রাখা যায়। মান্নান দা বলেন, বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। মমতা বলেন, একটু বাংলাকে নিয়ে গর্ববোধ করুন না।
এ বছরও ৫৬ কোটি টাকা ঋণ শোধ করতে হবে। এর মধ্যেও রাজ্যে উন্নয়নের কাজ চলছে। এর মধ্যেও সরকার প্রচুর কাজ করেছে।
জিএসটি গত বছরে বেড়েছে। স্টেট ল্যান্ড এক্সপেনডিচার গত ৮ বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও সোশ্যাল সেক্টরে গত ১১ সালে যা ছিল ১৮ ও ১৯ সালে তা বৃদ্ধি পেয়েছে।
একমাত্র মহারাষ্ট্রে ১২ হাজার কৃষক অনাস্থা করেছেন। দেশে কৃষক মৃত্যু বেড়েই চলেছে।
বিশ্ববাংলা শিল্প সম্মেলন এবার থেকে ২ বছর অন্তর করবো। বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালি করেছি। কিন্তু কেন্দ্র রাজ্যের অনেক প্রজেক্ট ইচ্ছা করে আটকে রেখেছে।
বাংলাকে কেন্দ্রীয় সরকার ‘দুয়ো রানির’ চোখে দেখে। এটা একটু ব্লুন। কেন্দ্রীয় সরকার জোর করে রাজ্যের প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছে।
রাজ্যে প্যারালাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন চালানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বিজেপি এমন একটা দল যারা কোনও ইন্সটিটিউশনকে কাজ করতে দিচ্ছে না। উন্মাদ নীতি দিয়ে মানুষের মনে, ব্রেনে স্টোর করে দিচ্ছে। এটা ঠিক নয়। কেন বিজেপির লোক অনৈতিকভাবে অন্য পার্টির লোকজনদের ফোন করবেন? আজ তৃণমূল কংগ্রেস সাধারন মানুষের দল তাই জিএসটি চাপিয়ে দেওয়া যায়।
কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মীরা মাইনে পাচ্ছেন না। ইলেকশনের আগে কত টাকা ঢুকেছে খোঁজ নিন। নানারকম নোংরা খেলা চালাচ্ছে ওরা।
বিজেপিকে ভোট দিলে কী হয় তার প্রমাণ ভাটপাড়া। বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে মমতা বলেন, আপনারা জ্বালিয়েছেন ভাটপাড়া। বিজেপিকে ভোট দিলে কী অবস্থা হয় ভাটপাড়া তার জ্বলন্ত প্রমাণ। স্কুল, কলেজ বন্ধ। হিন্দু আর মুসলিমদের মধ্যে ভাগাভাগি করছে। সব ধর্ম, সব ভাষা আমাদের লক্ষ্য। বাইরে থেকে হাজার হাজার লোক এনেছে আরএসএস।
এদিন মনোজ টিজ্ঞাকে উদ্দেশ্য করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই মাসের মধ্যে আপনাকেও বিজেপি ছাড়তে হবে। ঝাড়খন্ডে একজনকে খুন করা হয়েছে।
আমাদের একসাথে এগিয়ে আসা দরকার। মান্নান দা, সুজনবাবুদের বলি যে লড়াইটা করছি সেই লড়াইটা দেশের জন্য চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আপনারা এখানে আমাদের গালাগালি দেন আর সংসদে আমরা কংগ্রেসকে সাপোর্ট করি।
মান্নান ও সুজনকে উদ্দেশ্য করে মমতা বলেন, আপনারা কার সঙ্গে জোট করবেন না করবেন সেটা পুরোপুরি আপনাদের ব্যাপার।
চিট ফান্ড শুরু হয়েছে ২০১১- এর আগে। সবাই ভুলে গেছে সঞ্চয়িতার কথা। টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে সারদার। কমিশন তৈরি করা হয়েছে। প্রপার্টি অ্যাটাচ করে ইডি, সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে, রাজ্যকে দেওয়া হয়নি। আমাকে দিলে আমি নিশ্চয় ক্রতাম। এবার বলবো টাকা ফেরত দিন। অনেক হয়েছে। আপনাদের অনেক টাকা এত টাকার কোনও হিসেব নেই। আপনাদের বেলায় ‘মধু মানি’। নোট বন্দি থেকে এত টাকা হাতিয়েছেন লজ্জা করে না?
বিজেপি গণতন্ত্রকে কলঙ্কিত করেছে টাকা দিয়ে। বাংলার রাজনৈতিক দলগুলো অনেক মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে চলে, বিজেপি বাদে। আসুন আমরা যৌথভাবে বলি মানুষ যদি গণতন্ত্রকে ব্যবহার করতে পারে।
০.১ শতাংশ সব জায়গাতেই খারাপ আছে। সেটা ঠিক করা দরকার। আমরা মনিটরিং সেল তৈরি করেছি। ৫৯৩৩টি দরখাস্ত পেয়েছি।
১২৩ শতাংশ ডিএ আমরা পেয়েছি। পে কমিশনকে আমরা ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়েছি। ওরা ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়েছেন। আমি অনুরোধ করেছি যদি একটু আগিয়ে দিতে পারেন।
ভাটপাড়ায় আগে ৫৯ জনকে আর এখন ২৫০ জনকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
Be the first to comment