বুধবার নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় সরকার। নয়া নীতিতে স্কুল এবং উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে একগুচ্ছ সংস্কারমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ২০৩৫ সালের মধ্যে স্কুল স্তরের পড়াশোনা পাশ করার পরে অন্তত ৫০ শতাংশ পড়ুয়া যাতে উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি হয় তার ব্যবস্থা করা।
পাশাপাশি মাল্টিপল এন্ট্রি এবং এক্সিটের সুবিধা দেওয়ার সংস্থানের কথা বলা হয়েছে নয়া জাতীয় শিক্ষা নীতিতে। যে কোনও সময় সহজে ভর্তি হওয়া যাবে কলেজে এবং বেরিয়ে যাওয়াও যাবে। উচ্চ মাধ্যমিকের পদ্ধতিতে বদল আসছে।
এদিন দিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি গৃহীত হয়েছে। একবিংশ শতকের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে নয়া শিক্ষানীতি প্রস্তুত করা হয়েছে। গত ৩৪ বছরে শিক্ষানীতিতে কোনও বদল আসেনি। ফলে নয়া নীতি খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল।
আজকের দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়েছেন উচ্চ শিক্ষাসচিব অমিত খারে। নয়া শিক্ষা নীতি এবং সংস্কারমুখী পদক্ষেপের যুগলবন্দিতে ২০৩৫ সালের মধ্যে স্কুল থেকে উচ্চ শিক্ষায় ভর্তির হার বাড়িয়ে ৫০ শতাংশে তুলে আনার যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে তা পূরণ করা যাবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, নয়া নীতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রে শিক্ষা, প্রশাসনিক এবং অর্থনীতিক ক্ষেত্রে স্বশাসন এবং সমস্ত উচ্চ শিক্ষা জন্য একটি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান গঠনের কথা বলা হয়েছে।
নয়া নীতিতে কী কী গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক:
১) পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষায় জোর।
২) স্কুলের পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্ত করে মূল ধারনায় নামিয়ে আনা।
৩) ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে বৃত্তিমূলক শিক্ষা।
৪) মার্কশিটে শুধুমাত্র নম্বর এবং পরিসংখ্যানের পরিবর্তে প্রাধান্য পাবে পড়ুয়ার দক্ষতা এবং যোগ্যতা।
৫) পড়ুয়াদের জ্ঞানের প্রয়োগিক দিকের উপরে ভিত্তি করে বোর্ডের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
৬) M.Phil কোর্স উঠে যেতে চলেছে।
৭) ল’ এবং মেডিক্যাল ছাড়া বাকি সমস্ত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার ছাতার তলায় আসতে চলেছে।
৮) সরকারি এবং বেসরকারি নির্বিশেষে সমস্ত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অভিন্ন রেগুলেশন চালু হবে।
৯) যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষা ক্ষেত্রে জিডিপির ৬ শতাংশ লগ্নি করবে সরকার।
১০) যে কোনও অনুমোদনের ক্ষেত্রে পরিদর্শনের পরিবর্তে স্বচ্ছতা ভিত্তিক স্বঘোষিত ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে।
১১) আঞ্চলিক ভাষায় অনলাইন কোর্সে জোর।
১২) সবার কাছে শিক্ষার সুযোগ পৌঁছে দেওয়ার উপরে জোর। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে দেশে ১০০ শতাংশ স্বাক্ষরতার লক্ষ্য পূরণ।
Be the first to comment