বিরোধীরা সংসদের পবিত্রতা নষ্ট করেছে! কেঁদে ফেললেন বেঙ্কাইয়া নাইডু

বিরোধীদের হই-হট্টগোলে ব্যথিত হয়ে সংসদে দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেললেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডু ৷ তাঁর কথায়, বিরোধী সাংসদদের আচরণ তাঁকে যন্ত্রণা দিয়েছে ৷ তিনি এতটাই কষ্ট পেয়েছেন, যে সারারাত তিনি ঘুমোতে পারেননি বলে জানালেন উপরাষ্ট্রপতি ৷

পেগাসাস ইস্যুতে বিরোধীদের শোরগোলে মঙ্গলবার দিনভর উত্তপ্ত ছিল সংসদের উভয় কক্ষ। রাজ্যসভায় পরিস্থিতি চরমে ওঠে বিরোধীদের তুমুল বিক্ষোভে ৷ কংগ্রেস সাংসদ প্রতাপ সিং বাজওয়া ও কয়েকজন সাংসদ আধিকারিকদের টেবিলে উঠে কালো কাপড় নাড়তে থাকেন ৷

এরপর নয়া কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু হলে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের আসনের দিকে বিক্ষুব্ধ সাংসদরা রুল বুক ছুড়ে মারেন বলে অভিযোগ ৷ টেবিলের উপরেই কেউ বসে ও কেউ দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ৷ চলতে থাকে সরকার বিরোধী স্লোগান ৷ এর জেরে দফায় দফায় মুলতুবি করে দিতে হয় অধিবেশন ৷

ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বুধবার রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডু আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন ৷ সংসদে দাঁড়িয়েই কেঁদে ফেলেন তিনি ৷ বলেন, “গতকাল যখন কয়েকজন সাংসদ টেবিলে উঠে বসেন, আবার টেবিলের উপরে চড়ে দাঁড়ান, তখনই এই কক্ষের যাবতীয় পবিত্রতা নষ্ট হয়ে যায় ৷” এই ঘটনা তাঁকে প্রবল যন্ত্রণা দিয়েছে বলে জানিয়ে বেঙ্কাইয়া বলেন, “খুব দুঃখ পেয়েছি, সাংঘাতিক কষ্ট পেয়েছি…আমার যন্ত্রণা বোঝাতে পারব না, সারারাত ঘুমোতে পারিনি…৷”

বেঙ্কাইয়ার কথায়, সংসদ হল দেশের গণতন্ত্রের মন্দির ৷ যে টেবিল এলাকা রয়েছে, সেখানে বসেন আধিকারিকরা ও সাংবাদিকরা ৷ সেক্রেটারি জেনারেল ও প্রিসাইডিং অফিসারদের আসনকে কক্ষের পবিত্র গর্ভগৃহ হিসেবে মানা হয় ৷ এই গর্ভগৃহে প্রবেশ করাটাই একটা অপবিত্রতা আর প্রতি বছর এটা একটা রুটিনে পরিণত হয়েছে ৷ রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বলেন, “গতকাল এই পবিত্রতা নষ্ট হওয়ায় আমি খুবই বিপর্যস্ত ৷” চেয়ারম্যানের কথা শোনার মতো শালীনতা যেন সব সাংসদ দেখান, সেই আর্জি জানিয়েছেন বেঙ্কাইয়া নাইডু ৷

প্রসঙ্গত, কৃষক আন্দোলন, পেগাসাস বিতর্ক, মুদ্রাস্ফীতি, করোনা পরিস্থিতি, টিকার অপ্রতুলতা-সহ নানা বিষয়ে বিরোধীদের হট্টগোলের জেরে আগাগোড়া উত্তপ্ত ছিল সংসদের বাদল অধিবেশন ৷ বিরোধীদের হইচইয়ের কারণে বারবার মুলতুবি করে দিতে হয়েছে দুই কক্ষের কাজ ৷ এ দিকে, তার মধ্যেও একের পর এক বিল পাশ করিয়ে নেয় কেন্দ্রীয় সরকার ৷ তা নিয়েও বিক্ষোভ দেখান বিরোধীরা ৷ এ দিকে, নির্ধারিত সময়ের দু’দিন আগেই আজ শেষ করে দেওয়া হয় লোকসভার বাদল অধিবেশন । বেলা সওয়া ১১ টা নাগাদ লোকসভায় বাদল অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় । নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, অধিবেশন চলার কথা ছিল ১৩ আগস্ট (শুক্রবার) পর্যন্ত ।