বিজেপিকে রুখতে বৃহত্তর স্বার্থে তৃণমূলের সঙ্গেও জোটে যেতে পারে সিপিআইএম। বিমান বসুর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জোর জল্পনা শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক মহলের অন্দরে। কিন্তু, সেই জল্পনায় জল ঢাললেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, তৃণমূলের সঙ্গে কোনও মূল্যেই হাত মেলাবে না সিপিআইএম।
আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর, রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি জানিয়েছেন, এ রাজ্যে তৃণমূলের হাতেই আক্রান্ত হচ্ছে সিপিআইএম কর্মীরা। তাই শাসকদলকে সমর্থন করার কোনও অবকাশই নেই। আবার একইসঙ্গে সিপিআইএম-এর সাধারণ সম্পাদককে বলতে শোনা গিয়েছে, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে অবিজেপি কোনও মঞ্চে তৃণমূল থাকলে তাঁদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু রাজ্যের ক্ষেত্রে তা নৈব নৈব চ। এমনকী, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা মানেই যে তৃণমূলকে সমর্থন করা নয়, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, ত্রিপুরার ক্ষেত্রেও একই রণনীতি নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সীতারাম।
সূত্রের খবর, ত্রিপুরাতেও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে কোনওভাবেই তৃণমূলের হাত ধরা হবে না। দলীয় নেতৃত্বের কথায়, ত্রিপুরায় এতবছর ধরে বামেরা আন্দোলন করছে, বিজেপির হাতে মার খাচ্ছে। তখন তৃণমূল কোথায় ছিল? আদতে তৃণমূল এসে হম্বিতম্বি করে বিজেপির পথ আরও দৃঢ় করে দিচ্ছে বলেই অভিযোগ সুজন-সেলিমদের।
সীতারাম ইয়েচুরি আরও জানিয়েছেন, গোটা দেশে তৃণমূলের তুলনায় সিপিআইএম-এর সংগঠন বেশি। তাই যদি জাতীয় প্রেক্ষাপটে বিজেপি বিরোধীতায় তাঁরাই অগ্রণী ভূমিকা নেবে। অর্থাৎ রাজ্য এবং দেশের প্রেক্ষাপটে সিপিআইএম-এর স্ট্যাটেজি যে আলাদা, তা এদিন স্পষ্ট করে দেন এই শীর্ষ বাম নেতা।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা নির্বাচনের সময় একবার বর্ষীয়ান বাম নেতা গৌতম দেব বলেছিলেন, একটা সময় আসবে যখন বাম এবং তৃণমূল এক ছাতার তলায় আসবে। কার্যত তেমনটাই যেন ইঙ্গিত মিলেছিল বিমান বসুর বক্তব্যে। কী বলেছিলেন ফ্রন্ট চেয়ারম্যান? তিনি বলেছিলেন, ‘সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, কচ থেকে কোহিমা পর্যন্ত কোনও আন্দোলন সংগ্রামের প্রশ্ন দেখা দিলে, বিজেপি বিরোধী যে কোনও শক্তির সঙ্গে আমরা একজোট হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।’
একইসঙ্গে তৃণমূলের নাম না নিলেও তিনি বলেন, বিজেপি ছাড়া অন্য যে কোনও পার্টির সঙ্গে আমরা কাজ করতে প্রস্তুত।’ এ ক্ষেত্রেই স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের প্রতি যাবতীয় ছুঁৎমার্গ ঝেড়ে ফেলতে প্রস্তুত বাম শিবির।
Be the first to comment