আবির্ভাবেই চ্যাম্পিয়ন, রাজস্থানকে হারিয়ে ট্রফি উঠলো হার্দিকের হাতেই

Spread the love

নতুন আইপিএল চ্যাম্পিয়ন পেল দেশ। ঘরের মাঠে ভূমিপুত্রের জয়। মেগা ফাইনালে ব্যাটে-বলে দুরন্ত হার্দিক পাণ্ডিয়া। শেন ওয়ার্নকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হল না রাজস্থানের। কাটল না ১৪ বছরের বনবাসও। রবিবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে রাজস্থান রয়্যালসকে ৭ উইকেটে হারিয়ে আবির্ভাবেই আইপিএল চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটান্স। ২০ ওভারে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ১৩০ রান তুলেছিল রাজস্থান। ১৮.১ ওভারে ১১ বল বাকি থাকতেই তিন উইকেট হারিয়ে জয়সূচক রানে পৌঁছে যায় গুজরাট টাইটান্স। ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেন শুভমান গিল।

অনবদ্য টিম পারফরম্যান্স। পুরো আইপিএলে আগাগোড়াই ভাল খেলেছে গুজরাট। একটানা টেবিলের একনম্বর স্থান দখলে রেখেছিল হার্দিক পাণ্ডিয়ারা।‌ এদিন যোগ্য দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন গুজরাট। এর আগে কোনও দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল না হার্দিকের। কিন্তু ভূমিপুত্রের ওপর ভরসা রেখেছিল গুজরাট ফ্র্যাঞ্চাইজি। সেই ফাটকায় বাজিমাত।

ঘরের মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সামনে নতুন ইতিহাস রচনা করলেন হার্দিক অ্যান্ড কোম্পানি। এই সাফল্যের কৃতিত্ব প্রাপ্য গুজরাটের নেতার। একেবারে ‘লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট’ যাকে বলে, তাই করে দেখালেন হার্দিক। রবিবাসরীয় সন্ধেয় বল হাতে দুরন্ত। ৪ ওভার বল করে ১৭ রান দিয়ে মূল্যবান ৩ উইকেট তুলে নেন। ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ৩৪ রান যোগ করেন। এছাড়া অধিনায়কত্বও ভীষণ পরিণত। বোলিং চেঞ্জ, ফিল্ড প্লেসমেন্ট দারুণ। কে বলবে নেতা হিসেবে আইপিএলের মঞ্চেই হাতেখড়ি হয়েছে হার্দিকের। আইপিএল জাতীয় দলে কামব্যাকের মঞ্চ ছিল জুনিয়র পাণ্ডিয়ার জন্য। শুধু নিজের জায়গা পাকা করলেনই না, সাদা বলের ক্রিকেটে রোহিতের উত্তরসূরি হিসেবে নির্বাচকদের মস্তিষ্কে নিজের নাম ঢুকিয়ে ফেললেন হার্দিক।

এদিন টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সঞ্জু স্যামসন। একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত। পরিসংখ্যান বলছে, এইধরনের হাই-ভোল্টেজ ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে বড় রান খাড়া করাই বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু সেই ফায়দা তুলতে ব্যর্থ রাজস্থানের ব্যাটাররা। একসঙ্গে সবাই ফ্লপ। সচরাচর দেখা যায় না। রাজস্থান বরাবরই বাটলার নির্ভরশীল। কিন্তু তাই বলে একজন ব্যাটারও রান পাবে না! দেখে মনে হল পিচে জুজু ছিল। গুজরাটের বোলারদের সামনে আত্মসমর্পণ করে সঞ্জু, পাড়িক্কল, হেটমেয়াররা। ১২ ওভার ক্রিজে থাকলেও এদিন একেবারেই ছন্দে ছিলেন না বাটলার। ৩৫ বলে ৩৯ রান করে হার্দিকের বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন। তারমধ্যে নেই একটাও ছয়। যা একদমই বাটলার সুলভ নয়। কিন্তু তাসত্ত্বেও রাজস্থানের সর্বোচ্চ স্কোরার তিনিই।

যশস্বী ২২ রান করেন। সঞ্জু স্যামসন (১৪), দেবদত্ত পাড়িক্কল (২), শিমরন হেটমেয়ার (১১), রবিচন্দ্রন অশ্বিনরা (৬) শুধু এলেন আর গেলেন। ১৬.২ ওভারে ১০০ রানের গণ্ডি পার করে রাজস্থান। ২০ ওভারের শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩০ রান তোলে। বল হাতে দুর্দান্ত হার্দিক পাণ্ডিয়া। জস বাটলার, সঞ্জু স্যামসন এবং শিমরন হেটমেয়ারের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন গুজরাটের নেতা। অল্প রান পুঁজি করে নামলেও শুরুতে গুজরাটের ব্যাটারদের চাপে ফেলে দেয় ট্রেন্ট বোল্ট, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণরা।

‌ প্রথম ওভারে বোল্টের বলে শূন্য রানে আউট হতে পারতেন শুভমান গিল। কিন্তু সহজ ক্যাচ ফস্কান চাহাল। প্রথম ওভারে শুভমান ফিরে গেলে হয়তো ম্যাচের মোড় ঘুরে যেতে পারত। যদিও প্রথম উইকেট পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি রাজস্থানকে। দ্বিতীয় ওভারে প্রসিদ্ধের বলে বোল্ড হন ঋদ্ধিমান সাহা (৫)। ৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় গুজরাট। রান পাননি ম্যাথিউ ওয়েডও (৮)। ২৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় হোম টিম। দ্বিতীয়বার প্রাণ ফিরে পান শুভমান। চাহালের বলে ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হন হেটমেয়ার। ১০ ওভারের শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ৫৪ রান ছিল গুজরাটের।

তবে মাত্র ১৩০ রান সম্বল করে নামলে ফিল্ডিং অনেকটাই পার্থক্য গড়ে দেয়। ক্যাচ মিস করলে বেরিয়ে যায় ম্যাচও। সেটাই হল রাজস্থানের ক্ষেত্রে। তৃতীয় উইকেটে ৬৩ রান যোগ করেন শুভমান-হার্দিক জুটি। ৩০ বলে ৩৪ রান করে গুজরাটের নেতা আউট হলেও ম্যাচ ততক্ষণে রাজস্থানের হাত থেকে প্রায় বেরিয়ে গিয়েছে। বাকি কাজটা সারেন শুভমান গিল এবং ডেভিড মিলার। ক্রিজে নেমে দ্রুত গতিতে বাকি রান তুলে ফেলেন কিলার মিলার (৩২)। ৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন গিল। ম্যাচের সেরা হার্দিক পাণ্ডিয়া।‌ 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*