দীনেশ ত্রিবেদীর ছেড়ে যাওয়া আসনে প্রাক্তন IAS অফিসার জওহর সরকারকে রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে তৃণমূল। শনিবার এরাজ্যের শাসকদলের তরফে সরকারিভাবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। জহরবাবু একটা সময় কাজ করেছেন প্রসার ভারতীর সিইও হিসাবে। মোদী সরকারের প্রবল সমালোচক হিসাবে পরিচিত তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন দীনেশ ত্রিবেদী। নৈতিকতার খাতিরে রাজ্যসভার সদস্যপদ থেকেও ইস্তফা দেন তিনি। তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসনে উপনির্বাচন আগামী ৯ আগস্ট। ইতিমধ্যেই সেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। শুরু হয়েছে মনোনয়ন জমা নেওয়ার প্রক্রিয়াও।
তবে দীনেশ ত্রিবেদীর ছেড়ে যাওয়া আসনে তৃণমূল কাকে মনোনীত করে, সেদিকে নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের। মনে করা হচ্ছিল, দীনেশের জায়গায় মুকুল রায় বা যশবন্ত সিনহার মতো কোনও পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদকে প্রার্থী করবেন মমতা। বিশেষ করে ভেসে আসছিল যশবন্ত সিনহার নাম। তবে, সবাইকে চমকে দিয়েই জওহর সরকারের নাম রাজ্যসভার প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছে তৃণমূল।
তবে এই মুহূর্তে রাজ্য বিধানসভায় তৃণমূলের যা শক্তি তাতে জওহরবাবুর নির্বাচিত হওয়া নিয়ে কোনও সংশয় নেই। আর বিজেপি যদি প্রার্থী না দেয়, তাহল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই নির্বাচিত হবেন তিনি। ৬৯ বছর বয়সি এই বাঙালি আইএএস প্রায় ৪২ বছর কোনও না কোনও সরকারি পদের সঙ্গে যুক্ত। ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন প্রসার ভারতীর CEO। মোদী সরকারের কাজকর্মের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরেই পদত্যাগ করেন তিনি।
এদিকে রাজ্যসভায় মনোনয়ন পাওয়ার এই ঘটনাকে এক সুবর্ণ ‘সুযোগ’ হিসেবেই দেখছেন জওহরবাবু। তৃণমূলের তরফে এই ঘোষণার পর এই প্রাক্তন আমলা বলেন, “আমাকে হঠাৎ বলা হল, একটা সুযোগ দিল। সময় নিয়ে আমি ভেবে দেখলাম, এরকম সুযোগ তো আর কেউ দেবে না। অনেকেই জানেন আমি মোদী সরকার থেকে ইস্তফা দিয়ে চলে এসেছে ৫ বছর আগে। তারপর থেকে আমি ক্রমাগত তাঁর নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছি, লিখেছি, বক্তব্য রেখেছি। আমার উপর তাঁরা বিভিন্ন রকমের স্নায়ুর চাপও রেখেছে।”
জওহরবাবু যে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতার কোনও সুযোগই হাতছাড়া করবে না, সেটাও বস্তুত সাফ করে দেন। তাঁর কথায়, “আমি আরেকটা সুযোগ পেলাম। এই মোদী সরকারের দুর্নীতি ও ত্রুটি মানুষের সামনে তুলে ধরার আরেকটা সুযোগ দেওয়া হল আমাকে। সেই সঙ্গে বাংলার প্রতিনিধিত্ব করারও সুযোগ পেলাম।”
প্রসঙ্গত, সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের প্রাক্তনী জওহর সরকার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক পাশ করেন। এরপর প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস এবং সমাজবিদ্যা নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডবল এমএ; এবং পরবর্তীতে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও উচ্চশিক্ষা লাভ করেন।
Be the first to comment