কোনও মৌলিক অধিকারই নিরঙ্কুশ নয়, হোয়াটস্যাপ-এর গোপনীয়তা মামলায় পাল্টা যুক্তি কেন্দ্রের!

Spread the love

গোপনীয়তা রক্ষা যেমন নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ঠিক তেমনই দেশের দেশের আইন ব্যবস্থা ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা আমাদের কর্তব্য। কেন্দ্রের নয়া বিধি নিষেধের বিরুদ্ধে হোয়াটস্যাপ এর আদালতে যাওয়ায় এমনটাই বলল কেন্দ্রীয় সরকার।

সম্প্রতি কেন্দ্রের জারি করা নয়া ডিজিটাল বিধিতে ভারতীয়দের মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন তুলে আপত্তি জানিয়েছিল Whatsapp। এই নিয়ে আদালতেও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তারা। সেই মামলার জবাবে মৌলিক অধিকার নিয়ে এবার নয়া ব্যাখা দিল কেন্দ্র। নয়া ডিজিটাল বিধির পক্ষে সওয়ালে কেন্দ্রে জানিয়েছে, অবশ্যই নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকার রয়েছে তবে এটা ‘প্রয়োজনভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ’-এর প্রশ্ন।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম (OTT) এবং ডিজিটাল খবরের জন্য একগুচ্ছ গাইডলাইন বেঁধে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সেই গাইডলাইনে নির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ ২৫ মে। সেক্ষেত্রে ২৬ মে লাগু হয়েছে বিধি-নিষেধ।

অথচ সরকারি সূত্রের দাবি, ফেসবুক, ট্যুইটার এবং ইনস্টাগ্রামের মতো কোনও সোশ্যাল মিডিয়াই সেই নিয়ম মেনে পদক্ষেপ নেয়নি। এদিকে গতকাল ২৬ মে কেন্দ্রের এই নয়া ডিজিটাল বিধির বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ WhatsApp।

ভারত সরকারের নয়া তথ্যপ্রযুক্তি বিধি গ্রাহকদের প্রাইভেসি ও তথ্য সুরক্ষার পক্ষে বিপজ্জনক বলে দাবি করে সংস্থা। তার জবাবে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এদিন বলেন, ‘আইনের পরিভাষা অনুযায়ী, যে কোনও মৌলিক অধিকারই নিরঙ্কুশ নয়। গোপনীয়তার অধিকারের ক্ষেত্রেও তা চূড়ান্ত নয়। আইনের স্বার্থেই সবকিছুর উপর অল্পবিস্তর নিয়ন্ত্রণ থাকা প্রয়োজন।’

শুধু তাই নয় গোপনীয়তা সংক্রান্ত WhatsApp-এর যুক্তিকে সম্পূর্ণ খারিজ করে রবিশঙ্কর বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কারণেই মেসেজের সোর্স জানাতে বাধ্য WhatsApp। দেশের সার্বভৌমতা রক্ষার জন্য, গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে তদন্তের স্বার্থে এই তথ্য জানা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, নয়া গাইডলাইন প্রকাশ করে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছিলেন, সামাজিক মিডিয়া অপরাধী ও সন্ত্রাসবাদীদের প্রচারের এক প্লাটফর্ম হয়ে উঠেছে। ভারতে মোট হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী ৫০ কোটি, ৪৪.৮ কোটি ইউটিউব, ফেসবুকের ব্যবহারকারী ৪২ কোটি, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী ২০ কোটি এবং ট্যুইটারর ১.৫ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির অপব্যবহার করে দেশে ভুয়ো সংবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

সরকারি তরফে বলা বিবৃতিতে বলা হয় এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়, তাই সরকার এই জাতীয় প্ল্যাটফর্মগুলির জন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর ওটিটি এবং ডিজিটাল নিউজ পোর্টাল সম্পর্কে বলেছিলেন, তাঁদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি নিজস্ব ব্যবস্থা তৈরি করা উচিত।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক নিউজ ইস্যুতেও ভারতের রাজনীতি তোলপাড় হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই নয়া গাইডলাইন কতটা কার্যকর হয়। সরকার কি পদক্ষেপ নেবে। সে দিকেই তাকিয়ে আছে ওয়েব দুনিয়া।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*