জিটিএ (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) নির্বাচনের মনোনয়নের পালা মিটতেই পাহাড়ের নির্বাচনী ময়দানে এক নতুন সমীকরণের উত্থান । যেখানে জিটিএ নির্বাচনের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল-সহ গোটা দলের নেতা কর্মী সমর্থকরা । শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একপ্রকার জেহাদ ঘোষণা করে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন বিমল গুরুং। পরবর্তীতে তিনি অনশনের কারণে শারীরিক অসুস্থ হয়ে পড়ায় এখন সিকিমে চিকিৎসাধীন । আর সেই দলেরই নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা জিটিএ নির্বাচনে নির্দল হিসাবে লড়ছে ৷ তাও আবার একটা দুটো আসনে নয়, সবকটি আসনে । আর মোর্চার দলীয় নেতা-কর্মীদের এই অবস্থানেই হতবাক রাজ্য রাজনীতি।
জিটিএ নির্বাচনের ৪৫ টি আসনের মধ্যে ৩৫ টি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটি, জেলা কমিটি থেকে ব্লক কমিটি ও বুথ কমিটির পদাধিকারীরা। বাকি ১০ টি আসনে প্রার্থী করা হয়েছে মোর্চার সাধারণ কর্মীদের। তালিকায় মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি লোপসাং লামা, সহকারী সম্পাদক দীপেন্দ্র দেওয়ান-সহ একাধিক নেতারা । যদি জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতা করে বয়কটেরই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোর্চা তবে কেন নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে দলেরই নেতা, কর্মীরা?
এখন এমনটাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে শৈলরানীতে । যদিও মোর্চার ওই বিষয়টিকে সম্পূর্ণ নির্বাচনী কৌশল বলে মনে করছে রাজনৈতিকমহল। এমনকী ওই ঘটনার পর বিমল গুরুংয়ের অনশনকেও পাবলিসিটি স্টান্ট বলে কটাক্ষ করেছে অনেক বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সহ-সভাপতি লোপসাং লামা বলেন, “দলের সভাপতি জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতা করেছেন। তিনি এখন অসুস্থ। সেজন্য আমরা নির্দল হিসেবে প্রতিটি আসনে লড়ছি। দল থেকে পদত্যাগ করে আমরা মনোনয়ন দিয়েছি কারণ জিটিএ ব্যর্থ, আর জিটিএ পাহাড় ও পাহাড়বাসীর লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে না। সেজন্য জিটিএ’র বিরোধিতা করতে গেলে, জিটিএ’র মধ্যে থেকে করতে হবে। এখন আমাদের লক্ষ্য জিতে আসা।
সহকারী সম্পাদক দীপেন্দ্র দেওয়ান বলেন, আমরা একটা নির্দল হিসেবে একটা ফোরাম তৈরি করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। প্রতিটি আসনেই লড়ছি আমরা কারণ আমরা লড়াই না করলে যাঁরা এর আগে, যেমন অনিত থাপা, বিনয় তামাং জিটিএ চালিয়েছে, তাঁদের হাতেই ফের চলে যাবে। সেই পরিকল্পনা আটকাতেই আমরা লড়ছি। ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনিত থাপা অবশ্য বলেন, কেউ নির্দল নয়। ঘুরিয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাই লড়ছে। তাতে কোনও অসুবিধা নেই। এটা তাদের নির্বাচনী কৌশল। গণতন্ত্রে সবার নির্বাচনে লড়ার সুযোগ রয়েছে।
Be the first to comment