মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সারা রাজ্য জুড়ে ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে দেওয়া নিয়ে কর্মসূচি চলছে। দু’দিনের কর্মসূচির আজ প্রথম দিন। জেলায় জেলায় এই কর্মসূচি বুথ ও এলাকাভিত্তিক হলেও, কলকাতায় তা মূলত ওয়ার্ড ভিত্তিক। এই কর্মসূচিতে রবিবার রাজাবাজারে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের মিছিলে পা মেলালেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এদিন এই মিছিল থেকেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে একহাত নিলেন তিনি।
কুণাল ঘোষের দাবি, বিধানসভা নির্বাচনে গোহারা হেরে গিয়ে বিজেপি কেন্দ্রীয় সরকারের মাধ্যমে বাংলার মানুষের থেকে প্রতিশোধ নিচ্ছে। এই প্রতিহিংসার জায়গা থেকেই বাংলার প্রাপ্ত অর্থ আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এ দিন কুণাল ঘোষ বলেন, বিধানসভা ভোটে বিজেপি গোহারা হারার পর কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে পড়েছে। বিজেপি ফুঁসছে। ওদের মুরোদ নেই মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করার। প্রত্যেকটা নির্বাচনে ওরা গো হারা হারে। এখন ওরা দু’ভাবে রাজ্যকে হয়রানি করছে। একটা হল কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে। অন্যটা রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আটকে দিয়ে। এই মুহূর্তে ৯৭ হাজার কোটি বকেয়া টাকা কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে দিচ্ছে না।
তাঁর আরও দাবি, একদিকে কেন্দ্রীয় সরকার বলছে ১০০ দিনের কাজে বাংলাই সেরা। অন্যদিকে আবার নানা অছিলায় টাকা আটকে দিচ্ছেন। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের মতে, এটা বাংলার হক। তিনি আরও বলেন, বাংলা থেকে যে ট্যাক্সের টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার, তার মধ্যে যেটা অংকের হিসাবে প্রাপ্য সেই টাকাই তো রাজ্যকে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের টাকা তো বিজেপির পৈতৃক সম্পত্তি নয়। মূলত প্রতিহিংসার জায়গা থেকেই কেন্দ্র টাকা দিতে চাইছে না। তাই মুখ্যমন্ত্রী বর্তমান পরিস্থিতিতে বিকল্প উপায়ে গরিব মানুষকে টাকা এবং কাজ দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
তবে আমাদের স্পষ্ট রাজনৈতিক কর্মসূচি- ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন রাজ্যকে দেওয়া হচ্ছে না, কেন্দ্রীয় সরকার জবাব দাও । ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা অবিলম্বে রাজ্যকে মিটিয়ে দিতে হবে এবং রাজ্যের বাকি প্রাপ্য অর্থও অবিলম্বে কেন্দ্রকে দিতে হবে।
এ দিন কুণাল ঘোষের এই বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, জন্ম থেকেই তো তৃণমূল বঞ্চনার কথা বলছে। যত টাকা আসছে কোথায় চলে যাচ্ছে বুঝতে পারছি না। সর্বত্র দুর্নীতি আর কাটমানি। কেন্দ্রীয় সরকারের যে সমস্ত প্রকল্প তার সুবিধা এখানকার মানুষ পায় না। তাদেরকে এই সমস্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এখানে পশ্চিমবঙ্গকে কম টাকা দেওয়া হয় না, বরং অন্য রাজ্যের তুলনায় বেশি টাকা দেওয়া হয়। যে কারণে আমার মনে হয় হিসাব দেওয়াটাও একটা দায়িত্ব। হিসাবপত্র ঠিকমত দিন তারপরে দাবি করুন, কেন টাকা দেবে না।
Be the first to comment