পুরুলিয়ার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের ২ অফিসারকে বদলি করা হল উত্তরবঙ্গে

Spread the love

অভিযোগকারীদেরকে পাশে বসিয়ে হাতে তথ্য-প্রমাণ নিয়ে পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দুই ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিককে উত্তরবঙ্গে বদলি করল রাজ্য। হুড়ার বিএলআরও অনুপম ভট্টাচার্যকে অ্যাসিস্ট্যান্ট এলএওল করে উত্তর দিনাজপুরে পাঠানো হয়েছে। আর বলরামপুরের সজল মালাকারকে ওই একই পদে কোচবিহারে পাঠিয়েছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার বিভাগ। শুক্রবার ভূমি ও ভূমি সংস্কার বিভাগের বিশেষ সচিব এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। এর পাশাপাশি আরও কয়েকটি বদলির খবর মিলেছে। তার মধ্যে পুরুলিয়ার পাড়া ব্লক আধিকারিক সুদীপ্ত ঘোষকে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরে পাঠানো হয়েছেl সেখানে থাকা শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাড়ার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিক করা হয়েছে।

জঙ্গলমহলের এই জেলায় জমি নিয়ে নানান সমস্যা চলছে। কয়েক মাস আগে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে পুঞ্চা ব্লকের প্রশাসনিক বৈঠকে সরব হয়ে প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। তারপর এই জমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে জেলায় যে টাস্ক ফোর্স গঠন হয়, সেই বৈঠকেও সরব হয়েছিলেন সভাধিপতি। কিন্তু তারপরেও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরগুলিতে জমি নিয়ে বেনিয়ম চলছিলই। কিছুদিন আগে হুড়া ব্লকে মিউটেশন-সহ জমি সংক্রান্ত নানা বিষয়ে হুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রসেনজিৎ মাহাতোও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁর সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়।

এরপর চলতি সপ্তাহের সোমবার পুরুলিয়ায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে দেখা যায়, একেবারে অভিযোগকারীকে পাশে বসিয়ে হাতে নানান তথ্য প্রমাণ নিয়ে ভূমি দপ্তরের বিরুদ্ধে একের পর এক বেনিয়ম তথা চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে আনছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী যে অভিযোগগুলো সামনে এনেছিলেন, সেগুলো ছিল হুড়া ও বলরামপুর ব্লকের। ফলে এই ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে হুড়া থেকে দুজন ও বলরামপুর থেকে তিনজন গ্রেপ্তার হয়। এরপরেই ওই দুই ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিককে সরিয়ে দিল রাজ্য।

অভিযোগ শুধু হুড়া, বলরামপুর নয়। এই জেলার একাধিক ব্লকে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরে নানান বেনিয়ম চলছে। এই বেনিয়মে জড়িয়ে রয়েছে ওই দপ্তরের কর্মী থেকে আধিকারিকরা বলে অভিযোগ। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া এক ও পুরুলিয়া দুই নম্বর ব্লকে গিয়ে মিউটেশন নিয়ে এমনই বেনিয়ম ধরেন তৎকালীন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। দেখা যায়, মিউটেশন নিয়ে দালালরা কোথাও ১৫ হাজার, কোথাও ১২ হাজার। আবার কোথাও ১০ হাজার দাবি করছে। সেইসঙ্গে এই কার্যালয়ের পাশেই জেরক্স দোকানের আড়ালে এই সংক্রান্ত কাজের নানান ফর্ম ফিলাপ করে দেওয়া হচ্ছে। তার জন্য রাখা হয়েছে একটা সুনির্দিষ্ট রেটচার্ট। এসব চোখে পড়তেই পদক্ষেপ গ্রহণ করে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*