উত্তরপ্রদেশের আজমগড় এবং রামপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে না কংগ্রেস। সোমবার বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়ে দিল উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস কমিটি। ওই বিবৃতিতে দলের প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির তরফে যোগেশ দীক্ষিত জানান, উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের হাল দেখার পর লোকসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন রাজ্যে দলের সংগঠন মজবুত করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার, যাতে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে শক্তিশালী বিকল্প হিসেবে কংগ্রেস নিজেদের দাঁড় করাতে পারে।
সদ্য সমাপ্ত উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। তারা মাত্র দুটি আসন পেয়েছে। গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস জোট বেঁধেছিল অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে। সেবার কংগ্রেস সাতটি আসন পায়। এবারের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস একাই লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেয়। সমাজবাদী পার্টি কয়েকটি ছোট দলের সঙ্গে জোট করেছিল। সমাজবাদী পার্টি প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পায়। অখিলেশ অবশ্য বিধানসভা ভোটের অনেক আগেই ঘোষণা করেছিলেন, তাঁরা কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও মতেই জোটে যাবে না।
কংগ্রেসের অন্দরেই বিধানসভা ভোট নিয়ে নানা বিতর্ক চলে। অভিযোগ ওঠে, রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীরা উত্তরপ্রদেশের ভোট নিয়ে আদৌ সিরিয়াস ছিলেন না। ভোটের কয়েকদিন আগে প্রিয়াঙ্কা উত্তরপ্রদেশ নিয়ে পড়েন। রাহুল কোনও মতে দায়সারা প্রচার করেন। এই অবস্থায় ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়।
রাজস্থানের উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরে দলীয় সংগঠনকে সারা দেশে মজবুত করার জন্য একগুচ্ছ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। গড়া হয়েছে একাধিক কমিটি। ২ অক্টোবর থেকে দেশে কংগ্রেস ভারত জোড়ো যাত্রা করবে। এখন থেকেই তার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। বিদেশ থেকে ফিরেই রবিবার রাহুল গান্ধী দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানে রাজ্যসভার ভোট নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, আলোচনা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের লোকসভা উপনির্বাচন নিয়েও।
লোকসভা উপনির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত কতটা বাস্তবসম্মত, দলের অন্দরে সেই প্রশ্নও উঠেছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, একাধিক নেতা ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, কংগ্রেসের মতো প্রাচীন দলের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই হঠকারী। প্রার্থী না দেওয়ায় দলীয় কর্মীদের মনোবলে আরও চিড় ধরবে। আবার অন্য মতও রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, প্রার্থী দিয়ে জামানত জব্দ হওয়াটা কোনও কাজের কথা নয়। দলীয় প্রার্থীরা যে জিততে পারবেন না, এটা কঠিন বাস্তব। তার থেকে দলের সংগঠন মজবুত করার দিকেই এখন বেশি নজর দেওয়া দরকার। লোকসভা ভোট পাখির চোখ হওয়া উচিত।
এদিনই সমাজবাদী পার্টি ওই দুই লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। আজমগড়ে প্রার্থী হচ্ছেন ধর্মেন্দ্র যাদব। রামপুরের প্রার্থী করা হয়েছে আজম খানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আসিম রাজাকে। বিজেপি আজমগড়ে প্রার্থী করেছে দীনেশ লাল যাদবকে। রামপুরের বিজেপি প্রার্থী ঘনশ্যাম লোধা।
Be the first to comment