সাংসদ হিসেবে ৮ বছর পূর্ণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার গত ৮ বছরের রিপোর্ট কার্ড পেশ করলেনি তিনি। পৈলানের ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও বিঁধলেন তৃণমূল সাংসদ। বললেন, প্রধানমন্ত্রী এই লোকসভায় একাধিক সভা করেছিলেন। বলেছিলেন, অভিষেক তো হারছেন। কিন্তু আপনারা পাত্তাই দেননি। একইসঙ্গে তাঁর চ্যালেঞ্জ, আমারও সাংসদ হিসেবে ৮ বছর হয়েছে, আপনাদেরও ৮ বছর হয়েছে। আমি তো রিপোর্ট কার্ড পেশ করলাম। সাহস থাকলে আপনারাও পেশ করুন।
ডায়মন্ড হারবারের সভা থেকে এদিন আর কী কী বললেন সাংসদ?
এক ডাকে অভিষেক: ‘দিদিকে বলো’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা ‘এক ডাকে অভিষেক’ প্রোগ্রাম লঞ্চ করলাম। যা সমস্যা ফোন তুলুন আমাকে জানান। এখন থেকেই এটা চালু হল। ডায়মন্ড হারবারের জন্য আমার আত্মিক সম্পর্ক। মধ্যিখানে চার-পাঁচটা লোক দেওয়াল তুলে দাঁড়িয়েছিল। আজ থেকে দেওয়াল ভেঙে দিলাম। সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। আপাতত দু’বছর চলবে। আপনাদের সমর্থন থাকলে ২০ বছর আমি এটা চালাব। যা সমস্যা থাকবে ফোন তুলে আমাকে জানান। এটা ভাববেন না যে একটা ছেলে বা মেয়ে ফোনের ওপরে বসে কথা বলছে বলে সেটা আমার কাছে আসছে না তা নয়। সব রিপোর্ট প্রতিদিব আমার কাছে এলে আমি ২ ঘন্টা করে দেখেনি। কেউ ইতস্তত বোধ করবেন না যে আমার পঞ্চায়েতের নেতা জেনে যাবে। আপনি বললে, পরিচয় গোপন থাকবে। ফোন তুলুন আমাকে জানান।
জনসংযোগে জোর: দু’সপ্তাহ অন্তর আমি প্রশাসনের সঙ্গে বসব সমস্যার সমাধান করব। ১৫-২০ দিন অন্তর প্রতিটি বিধানসভা, ব্লক, পঞ্চায়েত সমিতির, বুথের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসব। প্রতি মাসে এক দুজন বিধায়ককে ডাকব। পরিষেবা আরও কীভাবে পৌঁছে দিতে পারি সেটা বলব। প্রতি বুথে পৌঁছব, মানুষের কাছে যাব। এই পরিষেবায় সবাইকে যুক্ত করব। ২৫ তারিখ থেকে বুথে বুথে আমি নিজে যাব।
ধর্মের রাজনীতি নয়: সামনে কোনও ভোট নেই। তবু করছি। কেন? ভোটের জন্য রাজনীতি তৃণমূল করে না। মানুষের জন্য করে। ধর্মের জন্য রাজনীতি তৃণমূল করে না। আমার একটাই ধর্ম। মানবধর্ম। সেই কাজ আমি করব।
সাংসদ তহবিলের টাকা: ২০২০-২০২১ এ ১০ কোটি টাকা দেয়নি কেন্দ্র। এদিকে কেন্দ্রের বড় বড় নেতারা এসেছে ৮ হাজার কোটি টাকার বিমানে। ২০ হাজার কোটি টাকায় সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রজেক্ট হয়েছে। আমি বলেছিলাম, দরকারে আমার মাইনে কাটুন। মানুষের টাকা কাটবেন না।
কাজের রিপোর্ট কার্ড: ৬ বছরে ৩০ কোটি টাকার কাজ হয়। সেই হিসাব দিয়েছি। এটা শুধু সাংসদ তহবিলের কাজ। যদি সবার কাজের হিসেব দিয়ে বই করতে পারতাম, সারা জীবন পাতা ওলটাতে ওলটাতে কেটে যেত, কুৎসা করতে হত না। হাতে করে হিসাব নিন, জোড়া ফুলে ভোট দিন।
সাংসদ জীবনের ৮ বছর: আজকের দিন সাংসদ হিসাবে ৮ বছর পূর্ণ করলাম। ২০১৪ সালে ৫ জুন শপথ নিই। ২০১৯ সালে সাংসদ হিসেবে ১৮ জুন শপথ নিই। তাই আজকের দিনে এই কাজ করলাম।
তৃণমূল বিজেপির ভাষা ভিন্ন: আমাদের বিনয়ী হতে হবে। বিজেপি যে ভাষায় কথা বলে সেই ফাঁদে পা দেব না। ধর্ম নিয়ে নয় উন্নয়ন নিয়ে রাজনীতি করব।
দলীয় কর্মীদের বার্তা: অনেকে নিজেদের কেউকেটা ভাবেন। বলেন আমি করছি। আমি কেউ না, নেত্রী বলেছেন, ‘আমরা’। এই দলে ২ নম্বর কেউ নেই। এক নম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২,৩ নম্বর আপনারা। কর্মীরাই তৃণমূলের অ্যাসেট।
দলবদল: বলেছিল, ইসবার ২০০ পার। সত্তরে থেমে গিয়েছে। এখন তো লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। গেট বন্ধ করে রেখেছি। আমরা দল ভাঙানোর পথে বিশ্বাস করি না। তোমাদের কাছে ইডি আছে, অর্থবল আছে, আমাদের মানুষ আছে।
বিজেপি দাঙ্গা লাগায়: চেষ্টা করেছিল এই সাতগাছিয়া অঞ্চলে দাঙ্গা লাগানোর। বুথে বুথে আমরা রুখেছি। এটা গুজরাট নয়। তুমি দাঙ্গা লাগলে মানুষ চাঙ্গা করে ফেরত পাঠাবে।
রিপোর্ট কার্ড চ্যালেঞ্জ: আমার ৮ বছর হয়েছে তোমারও হয়েছে। রিপোর্ট নিয়ে আমি যাব। ক’টা রাস্তা আমি করেছি ক’টা রাস্তা তুমি করেছ? জায়গা সঞ্চালক মাঠ তুমি ঠিক কর। রিপোর্ট তুমি নিয়ে যাবে আমিও নিয়ে যাব। ভোকাট্টা করে মাঠের বাইরে পাঠাব।
Be the first to comment