উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে শুক্রবার কড়া নির্দেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্যপাল সিভিআনন্দ বোসকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, “জমিদারি শেষের পথে…”। একইসঙ্গে রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে কড়া সুরে অভিষেক জানালেন, “মানুষ যাকে নির্বাচিত করেছে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে, নিয়োগ করার ক্ষমতা তার। আপনার নয়।”
বাংলার মানুষের পারিশ্রমিক চুরি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মানুষের প্রাপ্য টাকা ফেরাতে চলছে আন্দোলন। রাজ্যপাল সাক্ষাৎ চেয়ে বৃহস্পতিবার থেকে রাজভবনের সামনে অভিষেকের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে ধর্না কর্মসূচি। এরই মাঝে শুক্রবার উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না রাজ্যপাল। সে প্রসঙ্গ তুলেই শুক্রবার ধর্নামঞ্চ থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে নিশানা করেন অভিষেক। বলেন, “২৪ ঘণ্টার কিছু বেশি হয়েছে আমাদের আন্দোলন। এরই মাঝে খবর এলো, নির্বাচিত সরকারকে উপেক্ষা করে উপাচার্য নিয়োগের শখ সুপ্রিম কোর্ট কেড়ে নিল।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “জমিদারি প্রথার অবসান ঘটানোর প্রথম নিদর্শন। মানুষ যাকে নির্বাচিত করেছে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে, নিয়োগ করার ক্ষমতা তার। আপনার নয়।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার শীর্ষ আদালতে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি সূর্য কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তোলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন। তারমধ্যে কীভাবে ১২ জনকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য পদে নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল? বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের কোনও অধিকার নেই রাজ্যপালের। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যপালকে এই প্রশ্নের জবাব রিপোর্ট আকারে সুপ্রিম কোর্টে জানাতে হবে। শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে রাজ্যপালের আইনজীবীকে বিচারপতি বলেন, রাজ্যের দুই সাংবিধানিক প্রধানের মধ্যে যেকোনও সময় আলোচনা হতে পারে। যদি না হয় তবে সেটাই দুর্ভাগ্যজনক। সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত রাজ্যপাল আর কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। এবং এখনও পর্যন্ত যাঁদের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে তাঁরা কোনও সুযোগ সুবিধা পাবেন না। আদালতে রাজ্যপালের মুখ পোড়ার পর, এই ইস্যুতে বোসকে আক্রমণ শানালেন অভিষেক।
Be the first to comment