পেগাসাসকাণ্ডে কি পশ্চিমবঙ্গে কারও ‘হ্যাক’ হয়েছিল? যদি সেই ঘটনা হয়ে থাকে, তাহলে কোন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাতে যুক্ত ছিল? এমনই সব প্রশ্নের উত্তর সন্ধানে তদন্ত কমিশন গঠন করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। যা ছ’মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে।
স্পাইওয়ারে পেগাসাস নিয়ে বিতর্কের মধ্যে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুরো বিষয়টির তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হচ্ছে। সেই কমিশনে আছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) এমবি লকুর এবং কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। পরে রাজ্য সরকারের তরফে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, তাতে কমিশনের কী কী কাজ হবে, তা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আড়ি পাতার যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা হয়ে থাকলে কীভাবে ম্যালওয়ার কাজ করেছে, তা তদন্ত করে দেখবে কমিশন। ‘নজরদারির’ জন্য ইজরায়েলের এনওসও গ্রুপের পেগাসাস বা অন্য কোনও সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে, কোন কারণে ‘আড়ি’ পাতা হয়েছিল, ‘আড়ি’ পাতার ফলে প্রাপ্ত কোথায় গিয়েছে, কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, তাও তদন্ত করা হবে। সেইসঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কোনও ব্যক্তি বা কোনও গোষ্ঠীর প্ররোচনা বা উস্কানির মতো বিষয়-সহ কোন পরিস্থিতিতে ‘আড়ি’ পাতা হয়েছিল, সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভূমিকা কী, ‘আড়ি’ পাতা হয়ে থাকলে আইনি দিকও বিবেচনা করে দেখবে কমিশন।
যদিও কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের উপর সরকারি নজরদারি চলছে, সেই দাবির স্বপক্ষে কোনও মজবুত ভিত্তি বা সত্যতা নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়, ‘মৌলিক অধিকার হিসেবে বাকস্বাধীনতার প্রতিজ্ঞা হল ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তি। আমরা সর্বদা খোলামেলা কথোপকথনের সংস্কৃতিতে জোর দিয়ে একটি অবগত নাগরিক সমাজের পক্ষে থেকেছি।’
পরে পেগাসাস ‘হ্যাক’-এর সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈষ্ণ সংসদে দাঁড়িয়ে দাবি করেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট-সহ অতীতে এই ধরনের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে সবপক্ষ। এই অভিযোগের কোনও তথ্যগত ভিত্তি নেই।’ পুরো বিতর্কের সঙ্গে কেন্দ্র বা বিজেপির নাম জড়ানোর জন্য ছিঁটেফোটা প্রমাণও নেই বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ।
Be the first to comment