কালো বিল, কালো দিন- প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের অপসারণের সংশোধনী বিলের তীব্র বিরোধিতা মমতার

Spread the love

বুধবার লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করতে চলেছে কেন্দ্র। ‘জম্মু-কাশ্মীর রিঅর্গানাইজ়েশন বিল ২০২৫’ ছাড়া তালিকায় থাকা আরও একটি বিল নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক। এই বিলের বিষয়বস্তু সামনে আসতেই তুমুল শোরগোল। প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে বিরোধী শিবির। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “আমি ভারত সরকারের আজ প্রস্তাবিত সংবিধান সংশোধনী বিলের নিন্দা জানাই। এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা একটি অতি-জরুরী অবস্থার সমান, এটি ভারতের গণতান্ত্রকে অবসান ঘটানোর একটি পদক্ষেপ। এই নিষ্ঠুর পদক্ষেপটি ভারতের গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার জন্য একটি মৃত্যু ঘণ্টা স্বরূপ।”
তিনি এদিন লেখেন, SIR-এর নামে ভারতের নাগরিকদের ভোটাধিকার দমন করার জন্য, এটি এখন কেন্দ্রের আরেকটি অতি-নিষ্ঠুর পদক্ষেপ। এই বিলটি এখন আমাদের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শেষ করতে চায়। আমরা যা প্রত্যক্ষ করছি তা অভূতপূর্ব—এই বিলটি ভারতীয় গণতন্ত্রের মর্ম মূলে হিটলারের আক্রমণের চেয়ে কম কিছু নয়। এই বিলটি বিচার বিভাগকে তার সাংবিধানিক ভূমিকা থেকে বঞ্চিত করতে চায়—আদালতের সেই ক্ষমতা কেড়ে নিতে চায়, যা বিচার এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় ভারসাম্যের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা বিষয়গুলিতে রায় দেওয়ার জন্য অপরিহার্য। পক্ষপাতমূলক হাতে এমন ক্ষমতা ন্যস্ত করে, বিলটি গণতন্ত্রকে বিকৃত করছে।”
তিনি আরোও লেখেন, “এটি কোনো সংস্কার নয়। এটি প্রতিগমন—এমন একটি ব্যবস্থার দিকে যেখানে আইন আর স্বাধীন আদালতের উপর নির্ভর করে না, বরং এটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এটি একটি ভয়ংকর চেষ্টা, যেখানে বিচারকে নীরব করে দেওয়া হবে, সাংবিধানিক সুরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে ফেলা হবে এবং মানুষের অধিকার পদদলিত করা হবে। এভাবেই স্বৈরাচারী শাসন, এমনকি ইতিহাসের ফ্যাসিবাদী শাসনও ক্ষমতাকে সংহত করেছে। এটি সেই মানসিকতারই প্রতিচ্ছবি যা ২০ শতকের অন্ধকারতম অধ্যায়ে বিশ্ব একবার নিন্দা করেছিল।”
মুখ্যমন্ত্রী এদিন লেখেন, “আদালতকে দুর্বল করা মানে জনগণকে দুর্বল করা। তাদের ন্যায়বিচার চাওয়ার অধিকার অস্বীকার করা মানে গণতন্ত্রকেই অস্বীকার করা। এই বিলটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামো—যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, ক্ষমতার বিভাজন এবং বিচারিক পর্যালোচনার—উপর আঘাত হানে, যা এমনকি সংসদও অতিক্রম করতে পারে না। যদি এটি পাশ করার অনুমতি দেওয়া হয়, তবে এটি ভারতে সাংবিধানিক শাসনের জন্য একটি মৃত্যু পরোয়ানা হবে।”

তিনি লেখেন, “এই বিলকে যেকোনো মূল্যে প্রতিরোধ করতে হবে! এই মুহূর্তে গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে! জনগণ তাদের আদালত, তাদের অধিকার এবং তাদের গণতন্ত্র কেড়ে নেওয়ার কোনো চেষ্টাকে ক্ষমা করবে না। জয় হিন্দ!”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*