প্রয়াত বিশিষ্ট অভিনেতা ও নাট্য ব্যক্তিত্ব গিরিশ কারনাড। সোমবার বেঙ্গালুরুর লাভেলি রোডে নিজের বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। বেশকিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন কারনাড।
১৯৩৮-এর ১৯ মে তৎকালীন বম্বে শহরে জন্ম গিরিশ কারনাডের। চার ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন তিনি। তাঁর প্রাথমিক পড়াশোনা কর্নাটকে। অঙ্ক এবং সংখ্যাতত্ত্বে স্নাতক হওয়ার পর রাজনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে অক্সফোর্ডে পড়াশোনা করেন। একসময় কাজ করতেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসে। ক্রমে চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি অভিনয় ও লেখালেখিতে যোগ দেন। চার দশকের বেশি সময় ধরে নাট্য চর্চার সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন কারনাড। বহু নাটক লিখেছেন। ১৯৬১ সালে তাঁর বিখ্যাত নাটক ‘যাত্রী’ রাতারাতি তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে যায়।
এরপর একে একে মঞ্চস্থ হয় ‘তুঘলক’, ‘হায়াভাদানা’-র মতো বিখ্যাত নাটক। মারাঠি নাটকের অন্যতম কান্ডারি ছিলেন গিরিশ কারনাড । হিন্দি ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি ভাষায় অভিনয় করেছিলেন কারনাড। একাধিক ছবির পরিচালকও ছিলেন যার মধ্যে রয়েছে বহু কন্নড় ও মরাঠি ছবি।
১৯৬০ থেকে কন্নড় ভাষায় লেখক হিসেবে পরিচিতি পেতে শুরু করেন গিরীশ । ১৯৯৮ সালে সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পুরস্কার জ্ঞানপীঠে ভূষিত হন। পরিচালক হিসেব ১৯৭৪ সালে পেয়েছেন পদ্মশ্রী, ১৯৯২ সালে ভূষিত হয়েছেন পদ্মবিভুষণ সম্মানে। পেয়েছিলেন চারটি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডও।
১৯৭০-এ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সংস্কার’ ছিল গিরিশের অভিনীত প্রথম ছবি। একে একে ‘নিশান্ত’ (১৯৭৫), ‘মন্থন’ (১৯৭৬), ‘স্বামী’ (১৯৭৭), ‘পুকার’ (২০০০), ‘ইকবাল’ (২০০৫)- এর মতো ছবিতে অভিনয় করেন। হাল আমলের বলিউডের ছবি ‘ডোর’-এ দাপুটে শ্বশুর, কিংবা সলমন খানের সঙ্গে ২০১২-এ ‘এক থা টাইগার’ এবং ২০১৭-এ ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’-এর মতো হার্ডকোর কমার্শিয়াল ছবিতেও সমান সাবলীল কারনাড। টেলিভিশনেও ছিলেন একইভাবে সাবলীল। ১৯৮৬-’৮৭তে জনপ্রিয় টিভি ধারাবাহিক ‘মালগুডি ডেজ’-এ অভিনয় করেছিলেন। তাঁর প্রয়াণে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে শিল্পী মহলে।
Be the first to comment