নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগরঃ
সম্প্রতি প্রবল বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি জলের তোড়ে ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়েছে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। নদী ভেঙে গেছে একাধিক জায়গায়, গ্রামাঞ্চলে জলমগ্ন অসংখ্য বাড়িঘর। যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, বিদ্যুৎ ও পানীয়জলের মতো প্রাথমিক পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে। ঠিক এই কঠিন পরিস্থিতিতেই দুর্গত মানুষদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এল নদীয়া জেলা উত্তর সাংগঠনিক বিজেপি।
জানা গেছে, জেলা বিজেপির উদ্যোগে পাঠানো হয়েছে এক লরি ত্রাণসামগ্রী—চাল, ডাল, চিড়ে, মুড়ি, বিস্কুট, ও শুকনো খাবারের সঙ্গে রয়েছে নতুন বস্ত্র ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী। এই ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন দলের একদল কর্মী-সমর্থক ও কার্যকর্তা, যারা উত্তরবঙ্গের উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই রওনা হয়েছেন।
জেলা উত্তর সাংগঠনিক বিজেপির সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, “উত্তরবঙ্গের বহু মানুষ আজ গৃহহীন। কেউ তাদের সঞ্চিত অর্থ হারিয়েছেন, কেউ বা আশ্রয় হারিয়েছেন। এই অবস্থায় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মানবিকতার তাগিদেই আমরা পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।” তাঁর কথায়, এই উদ্যোগ শুধুমাত্র ত্রাণ বিলি নয়—এটি এক ধরনের বার্তা, যে বিপদের সময় সমাজের প্রতিটি অংশকেই একে অপরের পাশে দাঁড়াতে হবে।
অর্জুনবাবু আরও জানান, “দলীয় কর্মীরা নিজেদের উদ্যোগে এই ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহ করেছেন। কেউ খাদ্যদ্রব্য দিয়েছেন, কেউ পোশাক বা অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন। আমরা চাই, উত্তরবঙ্গের মানুষ জানুক—তাদের দুঃখে নদীয়ার মানুষও পাশে আছে।”
এদিকে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, ভবিষ্যতেও এই সাহায্য অভিযান চলবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনে চিকিৎসা শিবির বা অতিরিক্ত ত্রাণ পাঠানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ শুধু মানবিকতার পরিচয় নয়, সাংগঠনিক দিক থেকেও তা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দুর্যোগের মুহূর্তে দলীয় কর্মীদের সক্রিয় ভূমিকা তাদের জনসংযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে, বিশেষ করে গ্রামীণ স্তরে।
সবশেষে বলা যায়, যখন একদিকে বন্যা উত্তরবঙ্গের মানুষের জীবনে গভীর দাগ রেখে যাচ্ছে, তখন অন্যদিকে এই ধরনের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া সমাজে আশার আলো জ্বালাচ্ছে। নদীয়া জেলা উত্তর সাংগঠনিক বিজেপির এই উদ্যোগ মানবিক সহমর্মিতারই এক বাস্তব উদাহরণ।

Be the first to comment